রাজশাহী

শাহজাদপুরে জমে উঠেছে নৌকার হাট

  প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২১ , ৭:৩৬:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ফরিদ আহমেদ আক্কাসী, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) :

শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরে কৈজুরী হাটে জমে উঠেছে এক বিশাল নৌকার হাট। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল হলেও শাহজাদপুরের নদী পাড়ের মানুষের বর্ষার পরেও অনেক দিন নৌকা চড়েই চলাফেরা করতে হয়। যমুনা, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসাগর আর গোহালা নদীর মত বেশ কটি নদী শাহজাদপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহমান থাকায় অনেক কাল আগে থেকেই কৈজুরীতে নৌকার হাট বসে আসছে। কালের বিবর্তনে কোষা, বজরা, গয়নার নৌকার বিলুপ্তি ঘটলেও কৈজুরীতে ডিঙি নৌকার হাট এখনও টিকে আছে। শাহজাদপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পূর্ব দিকে যমুনা নদীর তীরে কৈজুরীতে নৌকার পসরা সাজিয়ে হাট বসছে এখনও।

কৈজুরীতে সপ্তাহের সোমবার ও শুক্রবার হাট বসলেও নৌকার হাট বসে শুক্রবার। সোমবার সরেজমিন এ হাট ঘুরে দেখা যায় হাটে বিক্রির জন্য প্রায় কয়েক শতাধিক ডিঙি নৌকা আনা হয়েছে। হাটের ইজারাদার জানান পাবনার বেড়া, প্যাচাকোলা, শৈলজানার চর এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, চরকৈজুরী, পাঁচিল, জামিরতা, গুদিবাড়ি রতনদিয়া ধীতপুর থেকে বহু মহাজন ডিঙি নৌকা বিক্রির জন্য এ হাটে নিয়ে এসেছেন। নৌকা বিক্রেতা গুপিয়াখালী নতুন পাড়া গ্রামের কোরবান আলী জানান, নৌকা বিক্রি তাদের পৈত্রিক ব্যবসা।

বাড়িতেই তাদের কারখানা রয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ থেকেই কিশোর বয়সে বাবার সাথে নৌকা বিক্রি করতে তিনি কৈজুরী হাটে আসতেন। তখন ১২ হাত লম্বা একটি ডিঙি নৌকা ৬ শত থেকে সাড়ে ৬ শত টাকায় বিক্রি হোত । এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে প্রায় সাত হাজার টাকায়। বানতিয়ার চর হতে হাটে আসা এক নৌকা ক্রেতা আবু সামা জানান, যমুনা তীরবর্তী হওয়ায় আষাঢ়ের প্রথমেই বাড়ির চারপাশে বন্যার পানিতে থইথই করে এবাড়ি ওবাড়ি যেতে নৌকাই একমাত্র বাহন। আরো আগেই নৌকা কেনা লাগতো সময়ের অভাবে দেরি হয়ে গেলো। তবে আজ যে দামই হোক ছোট খাটো এক ডিঙ্গি নৌকা কেনাই লাগবে।

 

বানতিয়ার চর থেকে হাটে আসা হাসান আলী জানান, বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরতে নৌকা কিনতে এসেছি। আজ যে কোন মূল্যে হোক একটা ছোট ডিঙি নৌকা কিনতেই হবে। চরকৈজুরী গ্রামের আর এক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর জানান, বর্তমানে গ্রামগঞ্জে রাস্তাঘাট হওয়ায় এবং বর্ষার পর নদী পথ কমে যাওয়ায় শুধু বর্ষা মৌসুমে নৌকা বিক্রি ভাল হলেও বছরের অন্য সময় ব্যবসা টিকে রাখা কঠিন হয়ে পরে। নৌকার ব্যবসা এখন অনেকটাই মৌসুমী ব্যবসা হয়েছে। কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম নৌকার হাট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন নদীর নাব্য সংকটের কারণে বর্ষার পরপরই নদী পথ হারিয়ে যাচ্ছে । তাই নদীগুলোর নাব্য ফিরিয়ে আনা দরকার।

 

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by