বাংলাদেশ

শেষ হলো বাণিজ্য মেলা: ৩০০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ ‍মিলেছে

  প্রতিনিধি ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:৩১:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

শেষ হলো ২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। এবারের বাণিজ্য মেলায় প্রায় ৩০.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩০০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি মেলায় আনুমানিক প্রায় ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেলা আয়োজকরা।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) পূর্বাচলস্থ স্থায়ী মেলা কমপ্লেক্স বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিবিসিএফইসি) মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি ও এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ. এইচ. এম আহসান।

জানা যায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৩৩১টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্টুরেন্ট ছিলো। যা গতবছরের তুলনায় শতকরা ৪০ শতাংশ বেশি।

মেলায় ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও নেপাল থেকে অংশ নেয় মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠান।

বিভিন্ন ধরণের বস্ত্র, মেশিনারীজ, কার্পেট, কসমেটিক্স এ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারীওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারী, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর, ফার্নিচার ইত্যাদি পন্য মেলার প্রদর্শন করা হয়েছে।

এবারও মেলায় নির্মাণ করা হয় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এ প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, উন্নত শিল্প সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাঁর অবদান ও ভাবনা ইত্যাদিকে সকলের নিকট বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার প্রয়াস ।

প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত পুস্তকাদি এবং তাঁর জীবন ও কর্মভিত্তিক ডকুমেন্টারী প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়।

মেলায় সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত পর্যাপ্ত সংখ্যক বিআরটিসির ডেডিকেটেড শাটল বাস নিয়মিত মেলার দর্শনার্থীদের আনা-নেয়ায় নিয়োজিত ছিল।

মেলায় দ্বিতল কার পার্কিং-এ পাঁচ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধা ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে বিস্তর পার্কিং এর সুফল উপভোগ করেছে মেলার দর্শনার্থীগণ।

দর্শনার্থীদের সকল প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য মেলায় ছিলো একটি তথ্য কেন্দ্র। সকল শ্রেণির দর্শনাথী -ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে মেলায় নিশ্চিত করা হয় পর্যাপ্ত ব্যাংকিং সুবিধা।

বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, রক্তদানসেবা, নামাজ আদায়ের সুবিধা, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার/বেঞ্চ ইত্যাদি।

শিশুদের চিত্ত-বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয় মা ও শিশু কেন্দ্র এবং শিশু পার্ক। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা নিয়ে এক্সিবিশন হলের বাইরেও নির্মাণ করা হয় পর্যাপ্ত সংখ্যক টয়লেট এবং নিয়োজিত ছিলো পর্যাপ্ত সংখ্যক পরিচ্ছন্নকর্মী।

এছাড়া, মেলার সার্বিক নিরাপত্তায় মেলা প্রাঙ্গণ ও আশে-পাশের অঞ্চলকে সিসিটিভি সার্ভেল্যান্স সিস্টেমের আওতায় আনা হয়।

মেলায় নিয়োজিত পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যের পাশাপাশি ডিজিএফআই, এনএসআইসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মেলার সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলো। যেকোনো ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনারোধে মোতায়েন করা হয় শক্তিশালী ফায়ার ব্রিগেড।

মেলায় খাদ্য-দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা হয়রানি বন্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নেতৃত্বে প্রত্যহ পরিচালনা করা হয় ভেজাল বিরোধী অভিযান।

মেলায় ২৩টি রেস্টুরেন্ট ছাড়াও এক্সিবিশন সেন্টারের ভিতরে ৫০০ আসন বিশিষ্ট ক্যাফেটেরিয়ায় দর্শনার্থীদের জন্য সুলভমূল্যে চমৎকার পরিবেশে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা প্যাভিলিয়ন, স্টল ও প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি প্রদানের মাধ্যমে পুরষ্কৃত করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by