আন্তর্জাতিক

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া পদত্যাগ করবেন না

  প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২২ , ৪:৩৭:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

প্রবল আন্দোলনে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না বলে দেশটির পার্লামেন্টের একজন হুইপ জানিয়েছেন।

চরম অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জনসাধারণের মধ্য থেকে তার পদত্যাগের দাবি আসছিল। এদিকে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছেন চিকিৎসকেরা। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্টের তরফ থেকে এমন ঘোষণা এলো।

বিদ্যুৎ, খাদ্য, গ্যাসসহ জরুরি পণ্যের তীব্র সংকটের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে প্রবল জনবিক্ষোভ চলছে। জনরোষের কারণে প্রায় সব মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং বেশ কিছু পার্লামেন্ট সদস্য সরকার পক্ষ ত্যাগ করেছেন।

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বিরোধী এমপিদের জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ দেয়ার আহবান জানালেও তারা সেটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, প্রেসিডেন্টসহ পুরো সরকারকেই পদত্যাগ করতে হবে।

তবে গতকাল বুধবার (৬ এপ্রিল) সরকার পক্ষের চিফ হুইপ জনস্টন ফার্নান্দো এমপিদের উদ্দেশে বলেছেন, দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা বলতে চাই যে কোনো পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের কী স্মরণ করিয়ে দেব ৬৯ লাখ মানুষ প্রেসিডেন্টকে ভোট দিয়েছিলেন। সরকার হিসেবে আমরা পরিষ্কার করে বলছি, কোনো পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করবেন না। আমরা এর মোকাবিলা করব।’

ফার্নান্ডোর বক্তব্যের পর কলম্বোয় দুই শতাধিক চিকিৎসক সড়কে নেমে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাদের কাছে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘জনগণের বাঁচার অধিকারকে শক্তিশালী করুন। স্বাস্থ্য খাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করুন।’

এর আগে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দলীয় বেশ কিছু এমপির দলছাড়ার প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে প্রেসিডেন্ট জরুরি আইন তুলে নেন। নিজের বাসভবনের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভের জের ধরে তিনি পহেলা এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। জরুরি অবস্থা তুলে নিলেও ওইদিনেই তার দলের ৪১ জন এমপি দল ছেড়ে নিজেদের স্বতন্ত্র ঘোষণা করেন।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এবারেই সবচেয়ে বড় সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। ব্যাপক আমদানি নির্ভর দেশটির খাদ্য, জ্বালানিসহ দরকারি পণ্য কেনার মতো বৈদেশিক মুদ্রা নেই। দিনে ১৩ ঘণ্টার মতো লোডশেডিং, ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যসহ মৌলিক পণ্যগুলোর ঘাটতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।

গতকালও দেশজুড়ে জনবিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। জানুয়ারি থেকেই শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভ চলে আসছে। তবে গত ১৪ দিনে অনেক বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসার কারণে পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, মানুষ চাল, ডালসহ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম দরকারি জিনিসগুলোও পাচ্ছে না। এমনকি কাজে বা স্কুলে যাওয়ার জন্য বাস পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।

বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হলেও কোথাও কোথাও সহিংসতা দেখা গেছে; বিশেষ করে রাজনীতিকদের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে আর পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা শ্রীলংকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। -বিবিসি ও রয়টার্স

আরও খবর

Sponsered content

Powered by