ঢাকা

সন্তানের জন্য ফের বিয়ে করলেন বাবা-মা

  প্রতিনিধি ১ নভেম্বর ২০২২ , ৮:০৬:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের উদ্যোগে গতকাল সোমবার রাতে জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে একটি ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় মাদারীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিকুল ইসলাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ, জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম, পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর রহমান সিংসহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবীসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের খাগদী এলাকার কুদ্দুস সরদারের ছেলে মো. মিলন সরদারের সঙ্গে একই উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঘটকচর এলাকার শওকত আলীর মেয়ে সুমি আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে মিলন ও সুমির সংসারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। তবে বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই মিলন ও সুমির পরিবারের মধ্যে কলহ বাধে। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি হয়। পরবর্তীতে সুমি আক্তার বাদী হয়ে মাদারীপুর আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ সময় মিলন রাগ করে সুমিকে তালাক দেন।

সুমির দায়ের করা মামলার সাক্ষী দিতে গতকাল আদালতে এসেছিল আসামি মিলন ও তার পরিবার। এ সময় মামলার বাদী সুমি ও তাদের একমাত্র সন্তানসহ পরিবারের লোকজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ছোট একটি শিশু এজলাসের ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করছিল। ম্যাজিস্ট্রেট ছেলেটির পরিচয় জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ জানান, ঐ মামলার আসামি ও বাদীর ছেলে। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট ঐ মামলার বাদী ও আসামিকে সন্তানটির কথা বিবেচনা করে সংসার করার পরামর্শ দেন। পরে উভয়পক্ষের ভুল সংশোধন করে পুনরায় সংসার করবেন বলে আদালতকে অঙ্গিকারনামা দেন। এতে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গতকাল রাতে পুনরায় পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মিলন ও সুমির বিয়ে করেন।

মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আদালত চলাকালে আমি জবানবন্দি নিচ্ছিলাম। তখন দেখলাম একটি শিশু এজলাসের ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা শিশুটিকে বের করে দিচ্ছিল। তখন আমি শিশুটির পরিচয় জানতে চাইলাম। পরে জানতে পারলাম মামলার বাদী ও আসামির ছেলে। তখন বিষয়টি মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে মিলন ও সুমির পুনরায় বিয়ে দেওয়া হয়।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী দুজনেই তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাদের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এমনটি হয়েছে। তাই তাদের সন্তানের কথা চিন্তা করে আবার তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিয়েটি আমার কাজের জীবনের একটি ব্যতিক্রম বিয়ে।’

Powered by