ঢাকা

সাফারি পার্কের ১১ জেব্রাকে হত্যার অভিযোগ, বাঘের মৃত্যু গোপন

  প্রতিনিধি ৩০ জানুয়ারি ২০২২ , ৮:১৬:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ১১টি জেব্রা মারা যায়নি, প্রাণীগুলোকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ।

তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় দায়িত্বশীলরা একে অন্যকে ফাঁসাতে জেব্রাগুলো হত্যা করেছে।

রবিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে জেব্রা মৃত্যুর ঘটনায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। সংসদ সদস্য ইকবাল এসময় চলতি মাসে এই পার্কে একটি বাঘ মৃত্যুর খবরও দেন।

তিনি বলেন, চলতি মাসের ১২ তারিখে সাফারি পার্কে একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এটা কেউ জানে না। এত মূল্যবান প্রাণীগুলো মারা যাচ্ছে অথচ পার্ক কর্তৃপক্ষ তা গোপন করে যাচ্ছে। পার্কে ১০টি বাঘ ছিল একটি পুরুষ বাঘ মারা যাওয়ার পর এখন মোট বাঘের সংখ্যা ৯টি।

তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে এই সংসদ সদস্য বলেন, যাদের তত্ত্বাবধানে জেব্রা মারা গেছে তাদেরকে স্বপদে বহাল রেখে সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়। এতে পার্কের অন্যান্য কর্মচারীরা মুখ খুলতে সাহস পাবেন না। তিনি পার্কের প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল কবির ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে বলেন।

তদন্ত কমিটির যেসব সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছিলেন তারা হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। কর্মকর্তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এটি প্রশাসনের ব্যাপার।

পার্কে গত ১২ জানুয়ারি একটি পুরুষ বাঘ মারা যাওয়ার ঘটনাটি নিশ্চিত করে প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল কবির জানান, ওই বাঘের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে কিন্তু এখনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

তবে কেন সে সময় বাঘ মারা যাওয়ার তথ্যটি প্রকাশ করা হয়নি জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান জাহিদুল কবির ।

গত ২ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ৯টি জেব্রা মারা যায়। ওই ঘটনায় প্রাণি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দেশের বিভিন্ন ল্যাবে নমুনা পাঠিয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহ করেন। পরীক্ষায় প্রাপ্ত ২৩টি প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞ দল সোমবার পার্কের ঐরাবতী বিশ্রামগারে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বিশেষজ্ঞ বিশেষ মেডিকেল বোর্ড মারামারি করে চারটি এবং অন্যান্য পাঁচটি জেব্রা ইনফেকশনাল ডিজিজে মারা গেছে বলে জানায়।

আর জেব্রাগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং করণীয় বিষয়ে মতামত দেওয়ার লক্ষ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। পরে শনিবার আরও দুটি জেব্রা মারা যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা জেব্রা নানা সময়ে বংশ বিস্তারের পর পার্কটিতে এর সংখ্যা বেড়ে প্রায় তিন গুণ তথা ৩১টিতে দাঁড়ায়। ১১টি মৃত্যুর পর পার্কে এখন জেব্রা রয়েছে ২০টি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by