Uncategorized

সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি

  প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২০ , ৮:১৬:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্কঃ সারাদেশে কিছু সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি দিয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি। ইন্টারনেট খাতে ভ্যাট জটিলতার সমাধান চেয়ে শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তারা এই বন্ধের হুমকি দিয়েছে।একইসঙ্গে চলতি জুলাইয়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

চলমান করোনা মহামারীকালে যখন যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে ভার্চুয়াল মাধ্যম এবং ইন্টারনেটে মানুষের নির্ভরতা অনেক বেড়েছে, ঠিক তখনই এলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি। এ বিষয়ে
আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, “ভ্যাট জটিলতার সমাধান না হলে সীমিত আকারে সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।”

আমিনুল বলেন, দাবি মানা না হলে ইন্টারনেট বন্ধের এ কর্মসূচি ধাপে ধাপে অর্থাৎ প্রতিমাসে বা সপ্তাহে সপ্তাহে চলমান থাকবে।

বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে ইন্টারনেট কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ব্রডব্যান্ডের পাশাপাশি মোবাইল ইন্টারনেটও ব্যবহার হচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বলেন, ইন্টারনেটে ৫% ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) খাতে ১৫% আরোপিত ভ্যাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো এই ৫% ভ্যাট ইন্টারনেট গ্রাহক থেকে আদায় করে, আর ১৫% ভ্যাট আইএসপিগুলো ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাত থেকে আদায় করে থাকে। ফলে ৫% ভ্যাট গ্রাহক থেকে আদায় করা হলেও আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএনকে ভ্যাট পরিশোধ করতে হচ্ছে ১৫% হারে। সবমিলে আইএসপিগুলোকে ভ্যাট বাবদ খরচ দিতে হচ্ছে প্রায় ৩৫%।

আমিনুল জানান, বর্তমানে সারা দেশে ৮০ লাখের বেশি বাড়িতে তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন প্রায় সাড়ে ৩ কোটি গ্রাহক। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও বিল আদায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেলেও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ইন্টারনেটে ৫% ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাতে ১৫% ভ্যাট নির্ধারিত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা খাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ইন্টারনেটের প্রতিটি স্তরে (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) ৫% ভ্যাট আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর।

“কিন্তু এর কয়েক মাসের ব্যবধানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে পুনরায় ইন্টারনেট সেবায় ৫% ভ্যাট এবং অন্যান্য স্তরে ১৫% ভ্যাট আরোপ করায় বিষয়টিতে আবারও আগের জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ৩০% থেকে ৪০% বৃদ্ধি পাচ্ছে”, বলেন আমিনুল।

ইন্টারনেটে ৫% ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাতে ১৫% ভ্যাট আরোপকে ‘বৈষম্যমূলক’ এবং মূসক আইনের ‘পরিপন্থি’ বলেও মনে করছে আইএসপিএবি।

ইন্টারনেটে ভ্যাট আরোপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইএসপিএবির প্রস্তাব তুলে ধরে আমিনুল বলেন, “ইন্টারনেটের সকল ক্ষেত্রে ৫% অথবা ০% হারে ভ্যাট আরোপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে (ইন্টারনেট সেবায় ৫% ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য ১৫% ভ্যাট) জটিলতা নিরসন হবে। একইসঙ্গে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ৩০% থেকে ৪০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও দূর হবে। এর ফলে সর্বস্তরের ইন্টারনেট গ্রাহক ও দেশের জনসাধারণ অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আসতে পারবেন।”

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও দেশের সকল শ্রেণির জনগণের কথা বিবেচনা করে ইন্টারনেটে ভ্যাট জটিলতা নিরসন করে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ইন্টারনেটে ভ্যাট আরোপের পরিবর্তিত কাঠামোটি অর্ন্তভুক্ত করার অনুরোধ জানায় আইএসপিএবি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by