বরিশাল

সালিসে কিশোরীকে বিয়ে, সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

  প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২১ , ৫:৩০:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় সালিসে ডেকে কিশোরীকে বিয়ে করার ঘটনায় কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারসহ ছয় জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় মো. আল ইমরান নামে এক ব্যক্তি পটুয়াখালী জেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেনের দ্বিতীয় আদালতে বাদি হয়ে মামলাটি করেন।

মামলাকারী আল ইমরান কনকদিয়া ইউনিয়নের সুলতান হাওলাদেরর ছেলে ওই কিশোরীর প্রেমিক রমজান হাওলাদারের বড় ভাই। আদালত তার মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আল আমিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি একজন অপ্রাপ্ত বয়সী কিশোরীকে জোর করে বিয়ে করেছেন। তার বিরুদ্ধে বাদির ভাই রমজান হাওলাদারকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও বিষ খাইয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আল আমিন আরও জানান, কিশোরীকি সালিসে ডেকে নিজে বিয়ে করায় চেয়ারম্যান শাহিন তালাকনামা সৃষ্টি করতে বাধ্য হয়। মূলত ঘটনাটি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় তিনি তালাকে বাধ্য হন। মামলায় চেয়ারম্যান শাহিন ও তার পাঁচ সহযোগী এবং নিকাহ রেজিস্টার ও কাজী মাওলানা মো. আইয়ুবকে আসামি করা হয়েছে। আদালতে ওই কিশোরীর (১৪) জন্ম সনদ ও রমজান হাওলাদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছন। তার প্রথম স্ত্রী আছেন। সেই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার ছেলে বিবাহিত।

উল্লেখ্য, প্রেমঘটিত এক সালিসে কিশোরীকে বিয়ে করার পর চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি ফিরে গেছে ওই কিশোরী। ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন চেয়ারম্যান শাহিন। গত শনিবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের সঙ্গে তার স্ত্রীর তালাক সম্পন্ন হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কিশোরীর বাবা।

প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ের কথা বলে ওই কিশোরীকে চেয়ারম্যান নিজেই বিয়ে করায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় ইউনিয়নজুড়ে। এ ছাড়া ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়। যে কারণে তালাকের সিদ্ধান্ত হয়। যে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে হয়েছিল গতকাল শনিবার তার মাধ্যমেই চেয়ারম্যান শাহিন ও ওই কিশোরীর তালাক সম্পন্ন হয়।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার জানান, ওই কিশোরী তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে মেয়েটিকে তার বাবার সঙ্গে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, গত শুক্রবার ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান বলেছিলেন, মেয়েটিকে দেখে তার পছন্দ হওয়ায় তাকে বিয়ে করেছিলেন। এ ছাড়া তার বিয়ে প্রয়োজন ছিল। বিয়ের বিষয়টি নিয়ে তিনি লজ্জিত নন বরং আনন্দিত হয়েছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by