চট্টগ্রাম

সীতাকুণ্ডে সম্পত্তির লোভে ছোট ভাইয়ের বউকে খুন

  প্রতিনিধি ২৫ মে ২০২৩ , ৭:৫৫:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

 

কামরুল ইসলাম দুলু.চট্টগ্রাম :

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ছোট ভাইয়ের সম্পত্তি গ্রাস করতেই ভাসুর ও তার স্ত্রী মিলে গৃহবধূ রোখসানা আক্তারকে হত্যা করেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় 

বাঁশবড়িয়া ইউনিয়নের রহমতের পাড়া গ্রামে মোঃ আনোয়ার হোসেন কিবরিয়ার বসত ঘর থেকে তার স্ত্রী রোখসানা আক্তারের আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, রোখসানার ভাসুর গোলাম মোস্তফা ও তার স্ত্রী সপ্না আক্তার জায়গা সম্পত্তির লোভে কুপিয়ে হত্যা করে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে নাটক সাজায় বসতঘরে অগ্নিকান্ডে রোকসানার মৃত্যু হয়েছে। সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নানা বিশ্লেষন করে হত্যাকান্ডে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে নিজেরা অবগত হই। জিজ্ঞাসাবাদের নিমিত্তে গ্রেফতারকৃত মোস্তফা ও স্বপ্নার প্রদত্ত তথ্যাদি সম্পূর্ণ ভিন্ন হওয়ায় এবং এলোমেলো ভাবে কথাবর্তা বলায় মোস্তফা ও স্বপ্নাকে সন্দিগ্ধ আসামী হিসাবে ট্রিট করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে উভয়ে স্বীকার করে যে, তাহাদের সাথে ভিকটিমের সাথে সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন বিরোধ চলিয়া আসতে ছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে ঘটনার ৫ দিন আগে বাড়ীর উঠান থেকে পানি নিস্কাশন এর জন্য মোঃ মোস্তফা একটি ড্রেন করেছিল। কিন্তু ভিকটিম ড্রেনটি বন্ধ করে দেয়। উক্ত বিষয় নিয়ে ঝগাড়া বিবাদ হয়। মোস্তফা ও স্বপ্না দুইজনেই ভিকটিম মৃত রোকসানা সহ তার স্বামীকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। প্রথমে তারা সিদ্ধান্ত নেয় রোকসানাকে মারবে এর পরে সুযোগ বুঝে তার স্বামীকে মারবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন আসামী দুইজন পরিকল্পনা করে তার স্বামী যখন বাড়ীতে থাকবে না তখন ঘরের ভিতর মেরে ফেলবে এবং ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করবে। এই আলোকে আসামী মোস্তফা বাঁশবাড়িয়া বাজারস্থ ছুট্টু সওদাগরের মুদি দোকান থেকে ৯০ টাকার কেরসিন তৈল এবং স্বপন এর ফার্মেসী থেকে ৩০ টাকা দিয়ে হ্যান্ডগ্লাফস কিনে বাড়ীতে আসে। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় মোস্তফা নিজ বসত ঘরে মধ্যেই হ্যান্ডগ্লাফস পরিধান করে এক হাতে একটি গাছের সাইজ কাঠ নেয়, তার স্ত্রী কেরোসিন তৈলের বোতল নেয়। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। ভিকটিম রোখসানার ঘরের দরজা হালকা খোলা দেখেতে পেয়ে ভিতরে প্রবেশ করে রোখসানাকে খাটের উপরে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে মাথার পিছনে কাঠ দিয়ে বারি মেরে খাটের উপরে ফেলে দেয়। তারপর লেপ কাথা মুড়িয়ে দিয়ে ঘরের ভিতর অবস্থান করে। বিষয়টি দেখে ফেলে হোসনে আরা নামে বাড়ির আরেক মহিলা। এসময় কাউকে কিছু বললে তাকে এবং তার বোবা মেয়েকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে ঘরের ভিতর রেখে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে। আসামীগণ আবার দুপুর ১টার সময় গৃহবধূ রোখসানার বসত ঘরে প্রবেশ করে কেরোসিন তৈল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে আসে। তারা মনে করেছিল যে, মানুষ দুপুর বেলা ভাত রান্না করে গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ হয়ে মৃত্যু হয়েছে মর্মে চালিযে দিবে। কিন্তু গ্যাস সিলিন্ডার পর্যন্ত আগুন যাওয়ার আগেই ধোঁয়া দেখে প্রতিবেসীরা আসতে দেখে আগুন বন্ধ করে। এরপর কারেন্ট এর শর্ট বলে চলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

এদিকে নিহত গৃহবধূ রোখসানার পিতা বাদী হয়ে আসামী গোলাম মোস্তফা ও স্বপ্নার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by