প্রতিনিধি ২২ জানুয়ারি ২০২৫ , ৬:২৩:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
গোপালগঞ্জে কারাবন্দীদের কল্যাণে ও আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে জেলা কারাগারে আধুনিক বেকারীর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বেকারীর নামকরণ করা হয়েছে “ইহসান” বেকারী।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে গোপালগঞ্জের মানবিক জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে “ইহসান” বেকারীর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে তিনি ফলক উম্মোচন করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর প্রধান অতিথি আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও কারাবন্দীদের সাথে নিয়ে বিশাল আকৃতির একটি কেক কেটে সকলের মাঝে পরিবেশন করেন।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান, জেল সুপার মোঃ মোকাম্মেল হোসেন, জেলার তানিয়া জামান, ডেপুটি জেলার সুমন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ হারুন-অর-রশীদ, সহকারী পরিচালক মোঃ জুলফিকার আলী, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুলতানা জাহিদ পারভীন, প্রবেশন অফিসার আল আমিন মোল্লা সহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে নতুন এ বেকারীর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কথা বলেন বেকারীর মূল কারিগর মোঃ মহিদুল ইসলামের সাথে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার আল আমিন মোল্লা বলেন, অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি, প্রবেশন অফিসারের কার্যালয় গোপালগঞ্জের তত্ত্ববধানে ও জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় এ বেকারীর কার্যক্রম রোববার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে। এখানে আধুনিক ওভেন, মিক্সার মেশিন সহ প্রয়োজনীয় সব মেশিনে পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, কুকিজ সহ মানসম্পন্ন বেকারী সামগ্রী প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ বেকারীতে উৎপাদিত পন্য মানবদেহের জন্য শতভাগ নিরাপদ। খেতেও বেশ সুস্বাদু এবং মজাদার।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ হারুন-অর-রশীদ বলেন, কারাগারে কারাবন্দীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বর্ধনের জন্য আমরা কারাগারে বেকারী স্থাপন করে দিয়েছি। এখানে কারাবন্দীদের বেকারী সামগ্রী উৎপাদনের কাজ শেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি এখানে উৎপাদিত পাউরুটি, বিস্কুট, কুকিজ, কেক গোপালগঞ্জে বাজারজাত করা হবে। এখানে যারা কাজ করছেন তারা আয়ের একটি অংশ পাবেন।
এছাড়াও এখান থেকে কাজ শিখে কারাবন্দীরা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবেন। কারাগার থেকে বের হয়ে তারা যেন বেকারী স্থাপন বা বেকারীতে কাজ করে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। এতে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এ বেকারীতে উৎপাদিত পণ্যে কোন প্রকার ক্ষতিকারক উপকরণ ব্যবহার করা যাবে না। সর্বোচ্চ মাননিয়ন্ত্রণ করে গুনগত মানসম্মত ও নিরাপদ পণ্য উৎপাদন করতে হবে। তা হলেই কারাগারের বেকারীতে উৎপাদিত পণ্য গোপালগঞ্জবাসীর কাছে সমাদৃত হবে। পাশাপাশি কারাবন্দীরা এখানে কাজ করে বাড়তি অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি দক্ষতা অর্জন করবেন। এতে কারাগারে বেকারী স্থাপনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সফল হবে।