প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ২:৫৩:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ
গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনের সড়কে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভ্যানের ওপর মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে, যা চাদর দিয়ে ঢাকা ছিল। ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে থানা ভবনের সামনে একটি তিনতলা ভবন থেকে। ভিডিওর শুরুর ২০ সেকেন্ডে সড়কে একটি নিথর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে, একাধিক মরদেহ ভ্যানে স্তূপ করে রাখা হয়, যার মধ্যে একটি মরদেহের মুখ রক্তমাখা ছিল। পুলিশের দুই সদস্য মরদেহগুলো ভ্যানে তুলে দিচ্ছিলেন, এবং ভিডিওর বিভিন্ন অংশে অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।
ভিডিওটি সঠিকভাবে শনাক্ত করার জন্য অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায় যে, ভিডিওটি আশুলিয়া থানার সংলগ্ন ইসলাম পলিমারস এন্ড প্লাস্টিসাইজারস লি. অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টারের সীমানা দেয়াল থেকে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় যে, পোস্টারটি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী মো. আবুল হোসেন ভূঁইয়ার। ওই পোস্টার এবং বালুর বস্তার দেয়াল ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে সঠিকভাবে মেলে।
স্থানীয় দোকানি ফাহিমা বেগম এবং সবজি বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন এই জায়গাটি চিহ্নিত করেছেন। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ৫ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়, যার ফলে পুলিশ গুলি চালায় এবং অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। মরদেহগুলি হয়তো এ সময়ের গুলির শিকারদের হতে পারে।
ভিডিওতে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আরাফাত হোসেন এবং আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমানকে আংশিকভাবে দেখা যায়। পুলিশ সদস্যদের দাবি, আন্দোলনকারীরা থানায় আক্রমণ করলে পুলিশ টিয়ারশেল ও ছররা গুলি ছুঁড়ে। নিহতদের মরদেহ ভ্যানে তুলতে দেখা গেছে, তবে দাবি করা হয় যে ডিবি পুলিশের কাছে ভারী অস্ত্র ছিল না।
ঢাকা উত্তর (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ ভিডিওতে আরাফাত হোসেনকে চিহ্নিত করেছেন এবং জানান, তিনি নিরস্ত্র ছিলেন। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ জানিয়েছেন, ভিডিওটি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে পাঠানো হয়েছে এবং বিষয়টি নিশ্চিত করতে তারা কাজ করছেন। আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের সংঘাতে সাভারে অন্তত ৪৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্যও ছিলেন। এই ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া থানায় ২০টির বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।