বাংলাদেশ

আসছেন মোদি, কথা বলবেন তিস্তা নিয়ে!

  প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২১ , ৭:৫১:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পন ডেস্ক:

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী বা মুজিব বর্ষ উদযাপন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২৬ ও ২৭ মার্চ দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। 

সফরের অংশ হিসেবে ২৭ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। বৈঠকে তিস্তা নদীর পানিবন্টন নিয়ে আলোচনা করবেন দুই সরকারপ্রধান। আলোচনা হবে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সব ইস্যু নিয়েই। বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে স্বাক্ষর হবে ৩টি সমঝোতা স্মারক। এসময় যৌথভাবে কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের ঘোষণাও দিতে পারেন দুই দেশের সরকার প্রধান।

সোমবার (১৫ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে আগামী ২৬-২৭ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি মূলত মুজিব বর্ষ উদযাপন, স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের যৌথ উদযাপন উপলক্ষে সফর করছেন। তার এই সফর কোভিডের সময় প্রথম বিদেশ সফর। সফরের প্রথম দিন ২৬ মার্চ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিমান বন্দরে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে অভ্যর্থনা দিবেন। এরপর নরেন্দ্র মোদী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। একই দিন বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য প্রদান করবেন। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন।’

মন্ত্রী  জানান, ‘২৭ মার্চ সকালে নরেন্দ্র মোদি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ পরিদর্শন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তাছাড়া তিনি সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জে দুটি মন্দির পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিকেলে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক ছাড়াও প্রতিনিধি পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে। বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কিছু সমঝোতা স্মারক ও কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে পৃথক দুটি স্মারক ডাকটিকেট উন্মোচন করবেন।’

তিস্তা চুক্তির বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন তিস্তা চুক্তি সেই কবে ফাইনাল স্টেজে ছিলে।  তিস্তা চুক্তির প্রতিটি পৃষ্ঠায় সেসময় দুই দেশের সচিবদের সই করা আছে।  কিন্তু চুক্তিটি কি কারণে হয়নি আপনাদের জানা আছে। ভারত সরকার বার বার আমাদের অঙ্গীকার করেছেন দে স্ট্যান্ডবাই চুক্তি। তারা সে থেকে কোন ব্যতয় হয়নি। কিন্তু বাস্তবায়নটা এখনও হয়নি। আমরা প্রত্যেক দিনই আশা করি। এবং এটা ভারতের সাথে আমাদের যখনই কোন মিটিং হয়, এ ইস্যুটা আমরা তুলি। এবং সবসময় তোলা হয়। শুধু তিস্তা চুক্তি নয়, বাকি যে আমাদের ৬টি অভিন্ন নদীর পানি নিয়েও আমরা আলোচনা করি। এই যে আগামী ১৬ মার্চ নয়াদিল্লীতে সচিব পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শেষে কি কি আলোচনা হলো আপনাদের সে বিষয়ে জানাবো।’

নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের খুব সৌভাগ্য যে একটি দেশের সরকারপ্রধান আমাদের ঢাকা শহরের বাইরেও যাচ্ছেন। তিনি যশোশ্বরী মন্দির যেটি তীর্থস্থান সেখানে যাবেন। সাতক্ষীরায় গিয়ে প্রার্থনা করবেন। এরপর ওড়াকান্দিতেও যাবেন। সেখানে প্রার্থনা শেষে স্থানীয় লোকজনের সাথে মতবিনিময় করবেন। এটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কে কি বললো তা নিয়ে আমাদের কিছু যায় আসে না।’

নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের মধ্যে দিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।  রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে ২৭ মার্চ রাতে দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by