প্রতিনিধি ৮ জুন ২০২২ , ৫:৩৩:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক:
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার এ কথা জানিয়েছেন।
আগামী ২৫ জুন চালু হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর উব্দোধন করবেন।
উদ্বোধনের আগের দিন ২৪ জুন পায়ে হেঁটে জনসাধারণকে পদ্মা সেতু পারাপারের সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
২৬ জুন থেকে টোল দিয়ে যান পারাপার হতে পারে বলে জানান তিনি ।
বুধবার (৮ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেতু উদ্বোধনের দ্বিতীয় দিন (২৬ জুন) জনসাধারেণের জন্য যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হতে পারে। উদ্বোধনের দিনও কিছু যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হতে পারে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মনে রাখবেন যে, ২৫ তারিখে কোনও গাড়ি পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবে না। ২৬ তারিখ সকাল থেকে টোল দিয়ে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল করতে পারবে। আগের দিন কিছু সময়ের জন্য হয়তো খোলাও হতে পারে। সেটা এখনও নিশ্চিত না। পায়ে হেঁটে হয়তো যাতায়াত করতে পারবে, এটার জন্য সময়সীমা দেওয়া হবে। সে চিন্তাভাবনা চলছে।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “অনেক ঘটনা ঘটছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে সামনে রেখে অনেকে ষড়যন্ত্র করছে। এমনকি উদ্বোধনের দিন একটা ঘটনা ঘটানোর জন্য অনেকে কিন্তু মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে শত্রু ভেতরে ঢুকে কোনও ধরনের অন্তর্ঘাত করতে না পারে। এই কথাটা বলার জন্য বিশেষ করে আমি আপনাদের সামনে এসেছি। সবাই সেদিন সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখবেন।”
এর আগে একই অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন জানান, ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করা নাও হতে পারে।
মঞ্জুর হোসেন বলেন, “২৫ তারিখ পদ্মা সেতু পার হওয়ার জন্য অনেকের মধ্যে আগ্রহ আছে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে চলে আসার পর যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন দিয়ে বা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হবে কখন পদ্মা সেতু সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেটা হতে পারে পরদিন ভোর ৬টা বা ওই দিনই কোনো সময় থেকে।”
প্রসঙ্গত, যান চলাচল উন্মুক্ত হওয়ার পর পদ্মা সেতুতে হেঁটে পার হওয়ার সুযোগ থাকছে না।
ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুতে গাড়ি পারাপারে টোল নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে কোনো ধরনের গাড়ি এ সেতুতে চলাচল করতে পারবে তাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেতুতে ১৩ ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে বাইসাইকেল, নসিমন, করিমন, ভটভটি ও সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না।
এ বিষয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সেতু ও সড়ক) শাহ মো. মুসা গণমাধ্যমকে বলেন, “পায়ে হেঁটে সেতু পার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া কেউ সাইকেল নিয়েও পার হতে পারবে না। সেতুর উপর দিয়ে কোন যানবাহন পার হতে পারবে ও টোল কত সবকিছুর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।”
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “সেতুর উপর দিয়ে গতিতে যানবাহন চলবে। কেউ যদি পায়ে হেঁটে যায় বা স্লো মুভিং কিছু যায়, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এসব কথা বিবেচনা করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা, কার বা জিপে ৭৫০ টাকা, পিকআপ ভ্যানে ১ হাজার ২০০ টাকা, মাইক্রোবাসে ১ হাজার ৩০০ টাকা, ছোট বাসে (৩১ আসন বা এর কম) ১ হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে (৩২ আসন বা এর বেশি) ২ হাজার টাকা, বড় বাসে (৩ এক্সেল) ২ হাজার ৪০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ছোট ট্রাকে (৫ টন পর্যন্ত) ১ হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে (৫ টনের বেশি থেকে ৮ টন) ২ হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৮ টনের বেশি থেকে ১১ টন পর্যন্ত) ২ হাজার ৮০০ টাকা, ট্রাক (৩ এক্সেল পর্যন্ত) ৫ হাজার ৫০০ টাকা, ট্রেইলার (৪ এক্সেল পর্যন্ত) ৬ হাজার টাকা ও ট্রেইলার (৪ এক্সেলের বেশি) ৬ হাজারের সঙ্গে প্রতি এক্সেলে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে যোগ করে টোল দিতে হবে।