রংপুর

উলিপুরে বিএনপির নেতৃত্বে রাম-দা দিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনের উপর হামলা 

  প্রতিনিধি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৬:২৭:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে বিএনপির নেতৃত্বে রাম-দা দিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনের উপর হামলা 

কুড়িগ্রামের উলিপুরে থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূণ্য ঘোষণা করায় আতশবাজি ও আনন্দ মিছিল করার সময় দুই পক্ষের ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও তার লোকজনের রাম-দা’এর কোপে চারজন গুরুত্বর আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার থেতরাই বাজারে। এ ঘটনায় এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।  

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পল্লী  উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূণ্য ঘোষনা করা হয়। এ ঘটনায় ওই রাতেই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলু মিয়া ও সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে থেতরাই বাজারে মিষ্টি বিতরন করে আতশবাজি ও আনন্দ মিছিল বের হয়। এ সময় চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন বাঁধা দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর বসুনিয়াসহ তার লোকজন ওই বাজারে প্রকাশ্যে রাম-দা দিয়ে চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজনকে কোপাতে থাকেন। এলোপাতারী রাম-দা এর কোপে ঘটনাস্থলে আবুল কালাম (৫৫), শাহালম বসুনিয়া (৪৫), বাচ্চা মিয়া (৬০) ও আব্দুল হাই (৬২) গুরুত্বর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বাচ্চা মিয়া ও আব্দুল হাইয়ের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাতেই তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শাহালম বসুনিয়াকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।  

থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা বলেন, চেয়ারম্যানের পদ শূণ্য ঘোষনায় করায় একদল উৎশৃঙ্খল লোক বাজারে মিছিল বের করে। আমি তাদের শান্ত হতে বলায় তারা আমার উপর চড়াও হয়। এ সময় বাজারের লোকজন প্রতিবাদ করলে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর বসুনিয়া ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলু মিয়া, সালাহ উদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মাথায় হেলমেট পরে প্রকাশ্যে বাজারে রাম-দা দিয়ে কুপিয়ে আমার চারজন লোককে গুরুত্বর আহত করেন। তারা রংপুর-কুড়িগ্রাম ও উলিপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিএনপি ও আ’লীগ নেতার এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। আমি এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার চাই।  

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলু মিয়া মিছিলে থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, মারামারি সময় আমি ছিলাম না। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমি জানি না। 

এ বিষয়ে থেতরাই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর বসুনিয়া তার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রথমে চেয়ারম্যানের লোকজন আমার উপর হামলা করে। আমাদের দুই-চারজনের পক্ষে শত শত লোকের উপর হামলা করা কিভাবে সম্ভব। মাথায় হেলমেট পরে প্রতিপক্ষকে কোপানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হয়তো ওগুলো ইডিট করা ছবি। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মেহেরুল ইসলাম জানান, মারামারির ঘটনায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তিনজনকে রংপুর ও কুড়িগ্রামে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের পুলিশ পাঠনো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

আরও খবর

Sponsered content