রংপুর

উলিপুরে জমে উঠেছে মিষ্টি লিচুর বাজার

  প্রতিনিধি ৫ জুন ২০২৪ , ৪:০৮:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে জমে উঠেছে মিষ্টি লিচুর বাজার

কুড়িগ্রামের উলিপুরে পৌর বাজারে উঠেছে বিভিন্ন জাতের মিষ্টি লিচু। জমে উঠেছে বেচাকেনা। তবে এ বছর লিচুর চরা দাম থাকায় গত বছরের তুলনায় অনেক বিক্রি কমেছে। পৌর বাজারের গবার মোড় সহ বিভিন্ন এলাকায় লিচুর পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

গত বছর লিচুর দাম কম থাকলেও এ বছর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লিচু। ব্যবসায়ীরা জানান, এবারে তীব্র তাপদাহ ও সময় মত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে ফলন কম হয়েছে। ফলে এবার দামও একটু বেশি। ক্রেতার উপস্থিত অনেক কম।সরেজমিন উপজেলার পৌর বাজারের গবার মোড় সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি লিচুর পসরা সাজিয়ে বসে আছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। ক্রেতারাও পছন্দের লিচু কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।

এ ছাড়া পাইকার আর ব্যাপারীরা উপজেলা ও উপজেলার বাহিরের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে লিচু সংগ্রহ করে বাজারের বিভিন্ন এলাকায় লিচু বিক্রি করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। দামে বেশি হলেও ক্রেতারা তাদের পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে ক্রয় করছেন। কেউ কেউ আবার প্রিয়জনের জন্য লিচু কিনে বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আবার অনেকে দর কষাকষির পর বেশি দাম হওয়ায় না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

তবে গত বছরের তুলনায় এবারে লিচুর বাজার একটু বেশি। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এবারে তীব্র তাপদাহের কারণে লিচুর ফলন অনেক কম হয়েছে। ফলন কম হওয়ায় বাজারদর বেশি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারে বিক্রি অনেক কমেছে।ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে বর্তমানে চায়না-৩, মাদ্রাজি, বেদানা ও বোম্বাই ও কাঁঠালি জাতের লিচু বেচাকেনা চলছে।

লিচুর জাতভেদে ১’শ টি করে লিচু বিক্রি হচ্ছে মাদ্রাজি ৩০০ টাকা, বোম্বাই ৪০০ টাকা, কাঁঠালি ৫০০ টাকা, চায়না-৩ আট শত টাকা।উপজেলার পৌর বাজারের লিচু ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম, রিয়াদ হোসেন, নাসির হোসেন, সাহেব আলী নুর আলম ও সাধন চন্দ্র সহ আরও অনেকে জানান, গত বছর লিচুর ফলন বেশি থাকায় লিচুর দামও কম ছিল। এবছর লিচুর ফলন কম থাকার কারণে দামও বেশি। তীব্র তাপদাহের কারণে ফলন কম হওয়ায় বাগান থেকে বেশি দামে লিচু কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।

ফলে লিচু বিক্রিও কম হচ্ছে।পৌর বাজারে লিচু কিনতে আসা আঞ্জুয়ারা বেগম, স্নিগ্ধা খাতুন, রাজিব মিয়া, আবুল হোসেন ও জামাল মিয়া সহ আরও অনেকে বলেন, এ বছর লিচুর দাম অত্যন্ত বেশি। বছরের মৌসুমি ফল খেতেই হবে তাই দাম যাই হোক না লিচু কিনতেই হবে। তারা আরও বলেন, গত বছর লিচুর আমদানি বেশি ছিল তাই লিচুর দাম কম ছিলো। এবারে আমদানি কম তাই লিচুর দাম বেশি হয়েছে। ফলে চাহিদার তুলনায় কমকরে লিচু কিনতে হচ্ছে।

নিম্ন আয়ের মানুষেরা এ বছরের মৌসুমি ফলটির স্বাদ নিতে পারবে না। পৌর বাজারে পাইকেরিতে বিক্রি করা লিচুর ব্যবসায়ী উজ্জ্বল চন্দ্র সরকার বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন জাতের লিচু ভিন্ন ভিন্ন দরে বিক্রি হচ্ছে। এ পর্যন্ত পাঁচটি জাতের লিচু এখানে বিক্রি হচ্ছে। এবারে লিচুর আমদানি কম থাকায় লিচুর দাম বেশি। এবারে তীব্র তাপদাহের কারণে বাগানে লিচুর ফলন অনেক কম হয়েছে। তিনি আরও জানান, এবারে ৪’শ লিচুর গাছ থাকা একটি বাগান নিয়েছেন ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে।

এ পর্যন্ত লিচু বিক্রি করেছেন প্রায় ১ লক্ষ। আয় হয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। আরও লিচুর আশা করছেন প্রায় ৩ লক্ষ। যা ভালো দামে বিক্রি হলে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এবারে লিচুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক বিক্রি কমেছে। গত বছর দিনে লিচু বিক্রি হত প্রায় ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার। তা এখন ৫০ হাজার লিচু দিনে বিক্রি করাই সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন জানান, এবারে স্থানীয়ভাবে লিচুর আমদানি কম থাকায় লিচুর বাজারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এবছর তীব্র তাপদাহের কারণে এলাকায় লিচুর ফলন অনেক কম হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে লিচু বেশি টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে এসে তা স্থানীয় বাজারে বেশি টাকা দরে বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content