রংপুর

উলিপুরে বছর পেড়িয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি ভেঙ্গে পড়া ব্রিজের

  প্রতিনিধি ৪ মে ২০২৪ , ৫:০৬:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে বছর পেড়িয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি ভেঙ্গে পড়া ব্রিজের

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বছর পেড়িয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি ভেঙ্গে পড়া ব্রিজের। গত বছর পানির তীব্র স্রোতে ব্রিজটি ভেঙে যায়। তখন থেকে যান চলাচল ও যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৬ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কামাল খামার গ্রামের তেতুলতলা থেকে দূর্গাপুরগামী সড়কে ব্রিজটি দীর্ঘদিন থেকে পথচারীসহ ওই এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হলেও নির্বিকার কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পূর্বে ব্রিজটি নির্মিত হয়। এর পর থেকে ব্রিজটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। এ ব্রিজের উপর দিয়ে দুর্গাপুর ইউনিয়নের বাকারা, কামাল খামার, সাদিরগ্রাম, দালালি পাড়া, জানজায়গির ও দুর্গাপুর বাজার এলাকাসহ আশেপাশের ৬ থেকে ৭টি গ্রামের প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।

এছাড়াও এ ব্রিজের উপর দিয়ে বিভিন্ন এলাকার পথচারী, রিকশা, ভ্যান, মটর সাইকেল, মিশুক সহ অনেক যানবাহন চলাচল করে। গত বছর মার্চে বুড়ি তিস্তা নদীর খননকাজ শুরু হলে বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতের কারণে ব্রিজটির একাংশ ভেঙে পড়ে। পরে স্থানীয়রা অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্রিজের সাথে জোড়া দিয়ে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করে পথচারীদের চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন। তৈরি করা সাঁকো দিয়ে যানবাহন পারাপার করতে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে।

এলাকাবাসী মোসলেম উদ্দিন (৭০), মোফাচ্ছেল মিয়া (৪২), বাবলু মিয়া (৪০), বিপ্লব সরকার (৩৮), নুরনবী (৪২), মোসলেম (৩২) ও আলাউদ্দিন (৫০) সহ আরও অনেকে বলেন, পাকিস্তান আমলের তৈরি ব্রিজটি অদ্যাবধি কোন সংস্কার হয়নি। গত বছর অতিবৃষ্টির কারণে পানির স্রোতে ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় আমরা এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছি। চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নিকট জানানোর পড়েও পাইনি কোন প্রতিকার। প্রায় প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে হচ্ছেন ক্ষতির শিকার।

এ পর্যন্ত ৭ থেকে ৮টি দুর্ঘটনা ঘটে এতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন লোক আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার শিকার অটোরিকশা চালক হাফিজুর রহমান, বৈদ্যনাথ চন্দ্র ও মোজাম্মেল হোসেন জানান, আমরা যাত্রী নিয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে যেতে পারি না। ব্রিজের এপারে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাটি স্থানীয় লোকের সহায়তায় পাড় করে ওপারে আবার যাত্রী উঠিয়ে যেতে হয়। যার কারণে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

তারা আরও বলেন, এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ উপজেলার শহর সহ দুর্গাপুর হাট, ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও পার্শ্ববর্তী পান্ডুল ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জায়গায় পথচারী, শিক্ষার্থীসহ অসুস্থ রোগী যাতায়াত করেন। ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যোগাযোগের খুব অসুবিধা হয়ে গেছে।

ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচলকারী শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ, আব্দুল মালেক, মরিয়মসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী বলেন, ভেঙ্গে পড়া ব্রিজের উপর দিয়ে স্কুলে যেতে আমরা ভয় পাই। কখন যেন নিচে পড়ে যাই। প্রায় সময় দুর্ঘটনা দেখে ভেঙ্গে পড়া ব্রিজ দিয়ে স্কুলে যেতে ভয় করে।

দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, ব্রিজটি অনেক পুরাতন। সংস্কারের অভাবে গত বছর ভেঙে পরে। ব্রিজটির উপর দিয়ে চলাচল করতে এলাকাবাসীর অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। আশা করি দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার জানান, ওই এলাকার চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে অবগত করেছেন। দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by