প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২৪ , ৪:২০:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির ফলে কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার দেখা দিয়েছে। বন্যার কারনে ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর ফলে বন্যা কবলীয়ত এলাকায় মানুষসহ গবাদিপশুর তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত উপজেলার সাহেবের আলগা, বুড়াবুড়ি, বেগমগঞ্জ ও হাতিয়া ইউনিয়নে গ্রামগুলোতে পানি বৃদ্ধির ফলে চরগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১২ হাজার পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ। তারা গবাদী পশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে পানিবন্দি মানুষজন উচু জায়গায় আশ্রয়ের জন্য কলার ভেলায় ও নৌকায় করে ছুটছেন।
সাহেবের আলগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাফফর রহমান বলেন, কাতলমারির চর, নেপুরের আলগা চর, মাঝের আলগা চর, জাহাজের আলগা, দই খাওয়ার চর, কাজিয়ার চর, হকের চর, একবিল খড়িয়ার চর, চর বাগুয়া, গেন্দার আলগা, ফতুল নামাজের চর, ঘুঘু মারির চরের প্রায় ৩ হাজার পরিবারে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। কয়েকদিন থেকে এসব মানুষজন গবাদীপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। পানিবন্দি থাকায় দেখা দিয়ে পানিসহ শুকনো খাবারের সংকট।
হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাইখুল ইসলাম নয়া জানান, মাঝিপাড়া, খাতাতিপাড়া, কদমতলা, টাপুরজান, শ্যামপুর, চর অনন্তপুর, হাতিয়াপাড়া, নয়ারডারা, চরেয়ারপাড়, কামারটারী এলাকার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবারে প্রায় ৯ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন কোন খাদ্য সহযোগিতা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তছির উদ্দিন বলেন, বিন্দুর চর, চর বালাডোবা, মাষ্টারপাড়া, মুসার চার, ব্যাপারীপাড়া, টোয়ার চর, মন্ডলপাড়া, সরকারপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, মাঝিপাড়া, একতা, চৌমহনী বাজার, চেয়ারম্যানপাড়া, বানিয়াপাড়া, মশালের চর, ইসলামপুর এলাকার প্রায় ৩ হাজার পরিবারে প্রায় ৯ হাজার মানুষ চারদিন থেকে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পানিবন্দি এসব মানুষ খাদ্য সংকটে রয়েছে।
বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্বাস আলী সরকার জানান, কিশামত ফুলবাড়ি, ছয়ারিপাড়া, সরকারপাড়া, ছড়ারপাড়, নয়াগ্রাম, শিমুলতলা, বগপাড়া, জলঙ্গারকুটি, চরকলাকাটা, পূর্ব সাতভিটা, আফতাবগঞ্জ, পশ্চিম সাতভিটা, বালাজনের ডারা, উত্তর বুড়াবুড়ি, মাঝিপাড়া গ্রামের প্রায় ৩ হাজার পরিবারে প্রায় ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি তিনদিন থেকে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সরকারি ভাবে এসব এলাকার মানুষ এখন পর্যন্ত কোন ত্রান সহায়তা পাইনি।
উপজেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা সিরাজুদৌল্লা জানান, সরকারি ভাবে এখন পর্যন্ত ৩৩ টন চাল ও ১লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা পর্যায়ক্রমে বিতরন করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান জানান, নদী ভাঙ্গনের শিকার ও পানিবন্দি প্রায় ৬ হাজার পরিবারকে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। তার মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪৩৫ জন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে দুর্যোগ কবলিত এসব মানুষের চাল ও শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।