চট্টগ্রাম

কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে উত্থাল চট্টগ্রাম আদালত চত্ত্বর

  প্রতিনিধি ৩১ জুলাই ২০২৪ , ৬:৩০:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে উত্থাল চট্টগ্রাম আদালত চত্ত্বর

কোটা সংস্কারের পক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ করেছে আন্দোলনকারীরা। শিক্ষার্থীদের মুহুর্মুহ স্লোগানে উত্থাল হয়ে ওঠে আদালত প্রাঙ্গন। এসময় তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন আইনজীবীরাও। কর্মসূচী শেষে পদযাত্রার মধ্যদিয়ে আন্দোলনকারীরা আদালত প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন।

বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা আদালত চত্বরে অবস্থান করছিলেন। পরে আইনজীবীদের একপক্ষ আন্দোলনে যোগ দিলে তাদের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা আদালত ভবনের দিকে যাত্রা করে। এসময় একপাশে বৃষ্টির মাঝে ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে দুই নারী। প্রতিবাদের ধ্বনি উঠছে তাঁদের কণ্ঠেও। এইচএসসি পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে নগরের ঈদগা এলাকা থেকে এসেছেন তাদের একজন। নিজের সঙ্গের জন্য ডেকে এনেছেন বান্ধবীকেও।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের মিছিলটি আদালতের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মূল সড়কে আসলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় রাস্তা থেকে সরে গিয়ে বিক্ষোভকারীরা আদালতের আইনজীবী চত্বরে সমবেত হয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

পুলিশের একটি দল শিক্ষার্থীদের মিছিল লক্ষ্য করে এগোতে চাইলে আইনজীবীদের একটি দল পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অবস্থান নেন। আইনজীবীরা এ সময় পুলিশকে আদালত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ ও বিজিবির কয়েকটি দল আদালত ভবনের প্রবেশ গেটে অবস্থান নেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

বিক্ষোভ চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, খুব সাধারণ একটি দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। সেজন্য আড়াই শতাধিক ছাত্র জনতার রক্ত নিয়েছে সরকার। আমরা সেই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারবো না। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শুরু হয় বৃষ্টি। প্রায় আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেও শিক্ষার্থীরা স্থান না ছেড়ে আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর একটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি মিছিল বিক্ষোভে যোগ দেয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নেন অনেক অভিভাবক।

সকাল থেকেই আদালত ভবনের সব ফটকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ সময় আদালতে কোনো গাড়ি যেতে দেওয়া হয়নি। বিচারপ্রার্থীরা হেঁটে গিয়েছেন। এ সময় আধাঘণ্টার মধ্যে সড়ক থেকে সরে আসতে আন্দোলনকারীদের আল্টিমেটাম দেয় পুলিশ। আইনজীবীদের একটি দল মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের সম্মিলিত দলটি মিছিল নিয়ে আইনজীবী ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে আইনজীবী ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেয় শিক্ষার্থী ও তাদের সমর্থক আইনজীবীরা।

কর্মসূচিকে ঘিরে আদালতপাড়ায় বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ ও আইনজীবী ঐক্য পরিষদের আইনজীবীদে মুখোমুখি অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এনেক্স-২ ভবনের সামনে অবস্থান করছেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। আর দোয়েল ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি ও জামাত-শিবিরপন্থী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের আইনজীবীরা। সেখানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও অবস্থান নিয়েছেন। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। তবে কোনোরূপ অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই গতকালের কর্মসূচী শেষ হয়। এতে কোনো সংঘর্ষ, হামলা বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আরও খবর

Sponsered content