প্রতিনিধি ৩ আগস্ট ২০২৪ , ৩:০৫:০০ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামে বৃষ্টি পুলিশ শাসকদল কেউই দমাতে পারেনি আন্দোলনকারীদের। নগরীর আন্দরকিল্লা শাহ জামে মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে বের হওয়া গণমিছিল উপরোক্ত তিন বাধা ডিঙিয়ে ছড়িয়ে পড়ে নগরীর নিউ মার্কেট, স্টেশন রোড, কদমতলী, টাইগারপাস, লালখান বাজার, ওয়াসা থেকে জিইসি পর্যন্ত। শুরুতে প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা থেকে জুমার নামাজ শেষে এ মিছিল গোড়াপত্তন হয়।
এসময় মিছিল নিয়ে লালদীঘি ময়দান হয়ে নিউমার্কেট মোড়ের দিকে যান আন্দোলনকারীরা। এরপর সেখানেও তারা আধা ঘণ্টা অবস্থান করে পুনরায় রেলওয়ে স্টেশন এলাকার দিকে যান। রেল স্টেশন থেকে মিছিলটি যায় নগরীর টাইগারপাস পর্যন্ত। টাইগারপাস থেকে মিছিলটি উত্তর দিকে যাত্রা শুরু করলে লালখান বাজার এবং ওয়াসা মোড়ে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলো মুখোমুখি হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জুমা নামাজ শুরুর আগেই দলে দলে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হতে থাকে আন্দোলনকারীরা। দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে নামাজ শেষ হতেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দরকিল্লা মোড়ে জমায়েত হয় আন্দোলনকারীরা। এসময় এক পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। আন্দোলনকারীরা তাদের দেখে ‘ভুয়া ভুয়া’ শ্লোগান দিতে থাকে। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে মিছিল নিয়ে লালদিঘী এবং রাইফেল ক্লাব হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে তারা আনুমানিক ১৫ মিনিট অবস্থান নেয়। সহস্রাধিক আন্দোলনকারীর উপস্থিতিতে মিছিলটি টাইগারপাস মোড়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান নেয়। এরপর মিছিলটি ওয়াসার দিকে যায়। সেখানে আন্দালনকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা বাধা ডিঙিয়ে জিইসি মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয় ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ‘ প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ এর ডাক দেন। তিনি তাদের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, আলেম-ওলামা, শ্রমিক, অভিভাবকসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে হাজারো মানুষ অংশ নেন। মিছিলে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য।
আন্দোলন ঘিরে আন্দরকিল্লা মোড়সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। পরবর্তীতে মিছিলটি রেলস্টেশন পেরিয়ে টাইগারপাস মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। সড়কে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেয়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কোতোয়ালি অঞ্চল অতনু চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঘটনাস্থলে দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাঁদের কর্মসূচি পালন করছেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশ কোনো বাধা দিবে না। তবে কেউ পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাত্রদের সাথে সাধারণ জনগণ ও মুসল্লিরা যুক্ত হওয়ায় পুরো চট্টগ্রাম যেনো মিছিলের নগরীতে রূপ নেয়। এতবড় কর্মসূচীতে মানুষের শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নগরবাসী।