চট্টগ্রাম

দুই কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাঁশখালী ইকোপার্ক সড়কের কাজ শুরু

  প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২৫ , ৬:৫৫:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

দুই কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাঁশখালী ইকোপার্ক সড়কের কাজ শুরু

দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম নান্দনিক পর্যটন স্পট বাঁশখালী ইকোপার্ক। এখানে রয়েছে দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুটিও। বামের-ডানের ছড়ার স্বচ্চ লেক, সু-উচ্চ পর্যবেক্ষক টাওয়ার, নান্দনিক ভিউ, চির সবুজের হাতছানি, ঋতু পরিক্রমায় অতিথি পাখির কলরবে মুখর পার্কটি অনুন্নত অবকাঠামো ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে হারাতে বসেছিল পর্যটক। অবশেষে দীর্ঘ দেড় যুগ পরে খানাখন্দে রুপ নেওয়া, পাহাড়ি ঢলে কালবার্ট ভেঙে যাওয়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায় ইকোপার্ক সড়কের সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়েছে।

বাঁশখালী প্রধান সড়কের মনছুরিয়া বাজার থেকে ইকোপার্ক পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার সরু সড়কটির সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের শুরুতে। এ বছরের জুন মাসের মধ্যেই সড়কের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ।

উপজেলা প্রকৌশী (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘প্রথম ধাপে ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০ ফুট প্রসস্থ করে বাঁশখালী ইকোপার্ক সড়কের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কাজ সম্পন্ন করা হবে। যার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যাওয়া কালবার্ট সংস্কার সহ মোট ৮টি কালবার্ট নির্মাণ করা হবে প্রথম ধাপে। বাকী আরো দেড় কিলোমিটার সড়কের সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ কখন শুরু হবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

বিগত ২০০৩ সালে আনুষ্টানিকভাবে বাঁশখালী ইকো পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়। পার্কের সৌন্দর্য্য অবলোকন করতে সারাদেশ থেকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করতো পর্যটক। নাটক, সিনেমা, গানের শুটিংয়ের জন্যও বেশ পরিচিতি লাভ করে পার্কটি। ২০০৮ সালে প্রলয়ংকরী এক পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ইকোপার্কের বামের ছড়ার বাঁধ ভেঙে বেশকিছু স্থাপনা ও হাইড্রো-ইলেক্ট্রনিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি তছনছ হয়ে যায়। এর পর থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়াতে পর্যটক হারাতে বসে পার্কটি।

এ পার্কের বামের ও ডানের ছড়ার পানি দিয়ে উপজেলার  কয়েকশত একর জুড়ে হয়ে থাকে বোরো চাষ ও বারোমাসী সবজির চাষাবাদ। সেটা রক্ষণাবেক্ষণ এবং লেকের পানিতে মাছ চাষ করে অনেক টাকা উপার্জন করার সুযোগ থাকলেও শুধুমাত্র পার্কের প্রবেশ পথ গাড়ি পাকিং টা সরকারিভাবে লিজ দিয়ে প্রতিবছর ১০-১২ লক্ষ টাকা পেয়ে থাকে মাত্র। বাঁশখালী ইকোপার্কের মত বিশাল এলাকা জুড়ে পর্যটন স্পট আর কোথাও নেই। এই পর্যটন স্পটকে সরকার যদি যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংস্কার করে তাহলে পর্যটকদের কাছ থেকে আরো বেশী রাজস্ব পাবে সরকার।

বাঁশখালী ইকোপার্কের সাবেক কর্মকর্তা ও জলদী অভযারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জমান শেখ জানান, ‘বাঁশখালী ইকোপার্ক স্রষ্টার অপার একটি দান। এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। বিশাল এলাকা জুড়ে সবুজের হাতছানি। এখানে অবকাঠামোগত সংস্কার করে, কৃত্রিমতার সংযোজন করা হলে দেশের নান্দনিক পর্যটন স্পটে জায়গা করে নিবে পার্ক টি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাশঁখালী ইকো-পার্কের উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হলে পুর্বের অবস্থা ফিরে পাবে।’

একইভাবে বাঁশখালী ইকোপার্কের কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হক বলেন, ‘ঢাকা থেকে বন বিভাগের বিশেষজ্ঞ টিম এসেছে পার্কে। তারা নকশা ডিজাইনসহ বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। খুব শিগ্রই পার্কটি সংস্কারের মুখ দেখবে বলে আশা করছি।’

উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন, ‘ইকোপার্ক সড়কের কাজ চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে শুরু হয়েছে। প্রধানসড়কের সাথে লাগোয়া প্রবেশপথ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্পটে কালবার্টের কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।’

আরও খবর

Sponsered content