প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২৫ , ৭:৪৩:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
রূপের রাণী পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতেও জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা কমতে থাকায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। রাতের কুয়াশার আবরণ আর সকালের শিশিরবিন্দু দেখে আবেগ আপ্লুত হন অনেকেই। দিনের বেলায় কিছুটা গরম অনুভূত হলেও বেলা গড়ানোর সাথে সাথেই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ঘন কুয়াশা ও শিরশিরে বাতাসে শীতের তীব্রতায় সাধারণ জনজীবনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির দূর্গম লংগদুতে শীতের তীব্রতায় কাঁপছে উপজেলার সাধারণ শ্রেণি-পেশার মানুষের। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্ট পাচ্ছে পাহাড়ের অসহায় শ্রমজীবী, দিন মজুর, গরীব হতদরিদ্র মানুষগুলো। সকালে রোদের দেখা না পেয়ে রীতিমত বিব্রত পরিস্থিতিতে খুঁদে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার খেটে খাওয়া মানুষগুলা।
প্রচণ্ড শীতে দৈনন্দিন কাজকর্মে চরমভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন শীতার্তরা। শীতের তীব্রতা কারণে দেখা দিয়েছে সর্দি-কাশী, ঠাণ্ডাজনিত নানাবিধ রোগব্যাধি। ফলে দিন দিন হাসপাতাল গুলোতে বৃদ্ধি পাচ্ছে নারী পুরুষ ও শিশু রোগীর সংখ্যা।
এদিকে লংগদুর উপজেলার পাহাড়ি-বাঙ্গালী অসহায়, গরীব, দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা লংগদু জোন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৩৭ বিজিবি) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ালেও কোনো স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ রযেছে এলাকার ভূক্তভোগী শীতার্ত অসহায় মানুষগুলোর।
স্থানীয়রা বলেন, শীতের তীব্রতায় কাঁপছে পাহাড়ের শীতার্ত গরিব মানুষেরা। শীত নিবারণের জন্য লতাপাতা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ; কিন্তু শীতার্ত মানুষদের পাশে জনপ্রতিনিধিদে তেমন দেখা নেই।
লংগদু মোটরযান চালক দুলাল মিয়া বলেন, তীব্র শৈত্য প্রবাহে গাড়ী নিয়ে বেড় হওয়ার যাচ্ছে না। তীব্র শীতে গাড়ি চালানো মুস্কিল, হাত পায়ের রক্ত চলাচল যেন বন্ধ হয়ে যায়। কাজে যেতে পারছে না নিম্নবিত্ত ও দিনমজুর মানুষগুলো। হতদরিদ্র মানুষ শীত মোকাবেলায় চরমভাবে হিমশিম খেলেও কেউ এগিয়ে আসছেন না।
স্থানীয় জেলে কামাল বলেন, কাপ্তাই হ্রদে এখন মাছ আহরণের ভরা মৌসুম, কিন্তু শীতের তীব্রতা নদীতে থাকতে পারছে না তারা। দিনের বেলায় যতটুকু সম্ভব নদীতে থাকতে পারি। প্রচন্ড ঠাণ্ডায় লেকের জলে মাছ ধরাও পড়ছে কম।
জেলা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, রাঙ্গামাটিতে এ পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে লংগদুসহ কয়েকটি উপজেলায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা জানান, হঠাৎ প্রচন্ড শীতের কারণে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে । তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ; এ সময়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।