প্রতিনিধি ৪ মার্চ ২০২৫ , ৩:৫৭:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ
২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সহ সকল লড়াইয়ের আকাঙ্খাকে ধারণ করেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় দলটির নেতাকর্মীদের নিয়ে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় তিনি বলেন, পুরোনো সংবিধান এবং শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। আমাদের এই ভূ-খন্ডের জনপদের মানুষের যে লড়াইয়ের ইতিহাস রয়েছে, ১৯৪৭ এর আজাদী লড়াই থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সে লক্ষেই এনসিপি কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলেও আমাদের যে স্বার্বভৌমত্ব, আমাদের সেই সার্বভৌমত্ব বার বার হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বার বার ভেঙে পড়েছে। আমারা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান গড়ে তুলতে পারিনি। এক দলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিজম এবং এক দলীয় স্বৈরতন্ত্রের বীজ বপণ করা হয়েছিল। ফলে আমরা বলেছি একটি নতুন প্রজাতন্ত্র আমাদের গড়তে হবে এবং তার জন্য একটি নতুন সংবিধান এবং গণ পরিষদ নির্বাচনের প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে আমরা সেকেন্ডলি পাবলিকের কথা বলেছি এবং আমরা সেই লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় নাগরিক পার্টি এই মুহুর্তে তার প্রথম লক্ষ হচ্ছে সাংবিধানিকভাবে কার্যক্রম বিস্তৃত করা, তৃণমূলে সাংবিধানিক কার্যক্রম বিস্তৃত করা এবং নিবন্ধন নিতে যে ধরনের শর্তাবলি পূরণ করতে হয়, সেই শর্তাবলি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করে আমরা নিবন্ধন কার্যক্রমে আগাবো। এ মাসের মধ্যেই আমরা আমাদের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজটি শুরু করবো।
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা চেয়ে বলেন,‘১৯৭১ সালে লাখ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা এসেছে, যার মূলমন্ত্র ছিল সাম্য ও সামাজিক সুবিচারের বাংলাদেশ। গত ৫৪ বছরে তা অধরা থেকে গেছে। আমরা এনসিপির নেতা-কর্মীরা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেই বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে আমাদের অনেকগুলো প্রস্তাবনার জায়গা রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম, বাংলাদেশ পুরো বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। ঢাকা শহরকে গ্লোবাল সাউথের প্রধান হিসেবে দেখা। এমন অনেকগুলো স্বপ্ন নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা বিশ্বাস করি, নতুন একটি সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছি। একই সঙ্গে সে গণপরিষদ নির্বাচনে যাঁরা জয়ী হবেন, তাঁরা সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন। এমন প্রস্তাবনাও আমাদের আছে। অল্প সময়ের মধ্যে সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি কার্যক্রম বিস্তৃত করবে।
এরআগে, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে দুটি ডাবল ডেকার বাসে করে স্মৃতিসৌধে আসেন দলের নেতা-কর্মীরা। এরপর স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা স্মৃতিসৌধের বেদিতে যান এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন, আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
শেষে দলটির নেতৃবৃন্দ, রাজধানীর রায়ের বাজারে ২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানের যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।