শিব্বির আহমদ রানা ১১ মার্চ ২০২৫ , ৪:০৯:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আমান উল্লাহর পুত্র মো. এয়াছিন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন্দোবস্তি করে প্রাচীন গণকবরস্থান দখল করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কালীপুর ইউপির পালেগ্রাম এলাকার সাতকানিয়া পাড়া পাহাড়ে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় স্থানীয় কালা মিয়ার পুত্র আবদুল মুবিন বাদী হয়ে বন্দোবস্তি বাতিল চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘মো. এয়াছিন নামে এক ব্যক্তি গোপনে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে পালেগ্রাম মৌজার বিএস দাগের ৩৫০৬ এর জায়গা বন্দোবস্তি করে নেন। জায়গাটি বহুবছর আগে থেকে গণকবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও সম্প্রতি কবরস্থানে লাশ দাফনে বাঁধা প্রদান করা হলে জানাজানি হয় মো. এয়াছিন এর নামে উক্ত জায়গা বন্দোবস্তি হয়েছে। অনেকদিন ধরে এই জায়গাকে স্থানীয় লোকজন জানাজার মাঠ এবং গণকবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে বলে জানান লোকজন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. এয়াছিন বলেন, ‘১৯৯৭ সালে আমি সহ আরো অন্যান্যরা পূর্ব পালেগ্রাম মৌজার ৩৫০৬ নম্বর দাগের সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তির দরখাস্ত করি। সরকার যাছাই-বাছাই করে আমি সহ আরো কয়েকজনের নামে সরকার খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়। এর পূর্বে আমার পিতা আলহাজ্ব আমান উল্লাহ ১৯৮২ সালে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তের জন্য দরখাস্ত করে তাও সরকার যাচাই-বাছাই করে ১৯৯৪ সালে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার পৈত্রিক ও আমার নামে বন্দোবস্তিকৃত জায়গায় বিগত ৩০-৩৫ বছর ধরে বিভিন্ন ফলজ, বনজ গাছ লাগিয়ে বাগান করে আসছি। আমার পার্শ্ববর্তী যারা বন্দোবস্ত নিয়েছিল তারা কেউ বাড়ি-ঘর, কেউ বাগান করে আসতেছে। আমি এলাকায় না থাকার সুযোগ নিয়ে ৫ আগস্ট পরবর্তী আমার পাহারাদার কে মারধর করে আমার বাগানের প্রায় ২০ লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, সাংবাদিক সহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমার বাগান পরিদর্শন করে। এই ব্যাপারে বাঁশখালী আদালতে একটি মামলাও হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্থানীয় কালা মিয়ার পুত্র আবদুল মুবিন বাদী হয়ে বন্দোবস্তি বাতিল চেয়ে অভিযোগ দিলে সোমবার দুপুরে কোকদন্ডী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন ভূইয়া সরেজমিনে পরিদর্শন করে। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। উক্ত জায়গায় কবরস্থানের মাঠ, চতুর্পাশ্বে কবরস্থান এবং মসজিদ দেখতে পেয়েছি। জায়গাটাও বিশাল। প্রায় ৫ একর। এই দাগে আরো অনেকেই বন্দোবস্তি করেছে। আমি যা দেখতে পেয়েছি তা ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার নিকট লিখিত ভাবে রিপোর্ট পেশ করব।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জমশেদ আলম জানান, ‘এ ব্যাপারে স্থানীয় এক ব্যক্তি বন্দোবস্তি বাতিল চেয়ে আবেদন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’