দেশজুড়ে

মিরসরাইতে পুলিশের বাধায় পুকুর দখলের চেষ্টা ব্যার্থ

  প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২০ , ৭:৫৭:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মিরসরাই ( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: মিরসরাইতে এক পরিবারকে জিম্মিকরে তাদের পুকুর দখল করে ঘাটলা নির্মান করতে গেলে পুলিশের বাদার মুখে তা পন্ড হয়ে গেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো দা, চুরি, কিরচ সহ দেশিয় অস্ত্রনিয়ে মহড়া দেয় দখলার দুষ্কৃতিকারীরা। মিরসরাই থানা পুলিশের নির্দেশে নিজামপুর পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ হাশেম তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনার স্থলে উপস্থিত হয়ে পুকুর দখল মুক্ত করেন ও ঘাটলা নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন।

শুক্রবার (২৪ সেপ্টম্বর) দুপুর ১২টায় উপজেলার হাদিফকির হাট গাজবাড়িয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সময় মতো পুলিশের উপস্থিতির কারনে কেউ হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কুষ্কৃতিকারীরা হাতের অস্ত্র ফেলে গা ঢাকা দেয় এতে পরিবেশ পুলিশের নিয়ন্ত্রনে আসে। নিজামপুর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক হাশেম জানান, পুকুর দখল ও অস্ত্রের মহড়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনা স্থলে গেলে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।

অভিযোগ কারি আলতাফ তার পুকুরের মালিকানা দলিল প্রদর্শন করলেও অপর পক্ষ উক্ত পুকুরে তাদের অংশ আছে বলে দাবি করে আদালতের একটি মোকদ্দমা নামা প্রদর্শন করে। তবে অভিযোগকারী আলতাফের দাবি উক্ত মোকদ্দমা জমি ও ভিটা সংক্রান্ত এতে পুকুরের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। যেহেতু জায়গা জমির বিষয় দলিলও কাগজ পত্রের ব্যাপার তাই উপস্থিত পুকুরে ঘাটনা নির্মান কাজ বন্ধকরে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।

তবে বাধা অমান্য করে পুনরায় ঘাটলা নির্মান কাজের চেষ্টা করলে আবারো পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আংশিক স্থাপনা অপসারণ করে ঘটনা নির্মাণকারিদের সতর্ক করা হয় এবং উভয়কে আগামিকাল ২৫ এপ্রিল ফাড়িতে একটি মিমাংসা বৈঠকের জন্য ঢাকা হয়েছে। কাগজ পত্র ও দলিল দেখে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

পুকুরের মালিক আলতাফ হোসেন জানান, উক্ত পুকুরের আরএস, বিএস, পিএস সবই আমাদের নামে, নামজারিও সম্পন্ন করা আছে। দখলদারদের সাথে আমাদের কিছু জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে সেখানে পুকুরের কোন সংযোগ নেই। আজ সকালে পুকুরে জাল নিয়ে মাছ ধরতে গেলে দেশিয় অস্ত্রনিয়ে, মো: শোভেন, মো; রুবেল, জুয়েল ও তাদের পিতা মনির আহম্ম, নরুজ্জামান, সালাউদ্দিন ও তাদেও পিতা জালাল আহম্ম সহ ১০ থেকে ১২ জন জোর পূর্বক পুকুর থেকে তুলে দেয় ও অস্ত্রদিয়ে জখমের চেষ্টা করে। আমাকে ( আলতাফ) পুকুর থেকে তুলে দিয়ে অস্ত্রের মুখে তারা পুকুর দখল করে ঘাটলা নির্মান শুরু করে।

তাদের মারমুখি ভাব ও অস্ত্রের মুখে একা প্রতিবাদ করার সাহস না পেয়ে প্রশাসনের সরনাপন্ন হই। এতে পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থলে এসে তাদের নিরস্ত্র করে ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে বাদা দিয়ে স্থান ত্যাগ করে। পুলিশ চলে গেলে পুনরায় তারা পুলিশের বাধা অমান্য করে জোর পূর্বক আবার স্থাপনা নির্মান কাজ শুরু করে। পুনরায় পুলিশে খবর দিলে পুলিশ আবারো ঘটনা স্থলে এসে স্থাপনার আংশিক উচ্ছেদ করে পুনরায় নির্মান কাজ না করার জন্য সতর্ক করে থানায় বৈঠকে বসার নির্দেশ দেন।

অভিযুক্তদের একজন শোভেন এই প্রতিবেদক কে জানান, এই সম্পত্তি গুলো গত ৯৬ বছর যাবত আলতাফরা ভোগ দখল করে আসছে। তারা আমাদের সহজ সরল দাদাদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে দখল করে নিজেদের নামে আরএস বিএস খতিয়ান ও নামজারি করে রেখেছে। বর্তমানে আমাদের বাড়ির ভিটাও তাদের কাছ থেকে ক্রয় করা। আমার দাদা ও তার দাদা ভাই হলেও তাদের এতো সম্পত্তি কিন্তু আমাদের কোন সম্পত্তি নেই এটা কেমনে হয়।

এই ব্যাপারে আমার মামা ছালাউদ্দিন তিনি বড় বড় জায়গার বোখারি করেন ও জায়াগা জমির কাগজ বুজেন তার কাছে যাই। তাকে বল্লাম আমরা একই মুরছির বংশ তাদের এতো সম্পত্তি আমাদের নেই কেন। তখন তিনি বল্লেন, ঠিক আছে তোমাদের জায়গার দাগ নাম্বার গুলো আমাকে দাও আর কিছু টাকা যোগাড় করে দাও আমি ব্যাবস্থা নিচ্ছি। তখন মামাকে আমরা দাগ নাম্বার ও টাকা জমিয়ে টাকা দিলে তিনি মামলা করার ব্যাস্থা করেন ও তাদের জায়গায় ইনডেকশান জারি করি।

এইনিয়ে গত ৫বছর আগে একবার মারামারি করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে আলতাফের বড় ভাই বিদেশে পালিয়ে যায়। এলাকার কামাল উদ্দিন মেম্বার টাকা খেয়ে তাদের পক্ষে কথা বলে। এখন যেহেতু আমার কাছে আদালতের মামলা কপি আছে এই সুযোগে আমি ঘাটলা নির্মান করেছি। এই মামলা না থাকলে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যেত। মামলার কপি দেখানোতে তিনি আমাদের কিছু বলার সাহস পান নাই।

এব্যাপারে কামাল মেম্বারের সাতে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন এলাকার মানুষ সব আমার কার পক্ষপাত করবো আমি? আমার কাজ কাগজ দেখা, কাগজ কি বলে আইন কি বলে সেটা দেখা। আরো কারো কাছ থেকে টাকা খাওয়ার বিষয়টা সম্পূর্ণ মিথ্যাও বানোয়াট। যে সব জায়গানিয়ে মামলা চলছে এগুলো আলতাফদের দাদাও বাবার কেনা জায়গা। কিছু জায়গা আছে নিলামে খরিদ করা। এসব নিয়ে মিরসরাই থানায় একাধিক বার বৈঠক হয়েছে এবং আমারা থানার মাধ্যমে মিমাংসা করে দিয়েছি। এখন তারা যদি না মানে আবার আদালতে মামলা করে জোর কারে দখল করি আমরা কি করতে পারি?

মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজিবর রহমান ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, এই বিষয়ে নিজামপুর ফাড়ির ইনচার্জ এসআই হাশেম আমাকে অবগত করেছে ও অভিগো কারীর কাছ থেকে একটি অভিযোগ গ্রহণ করেছি। এই ব্যাপারে নিজামপুর ফাড়িকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। খতিয়ে দেখার পর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by