চট্টগ্রাম

মিরসরাইয়ের আ.লীগ সন্ত্রাসী ছকিনা ডাকাতের অত্যাচারে অতিষ্ট এক পরিবার

  প্রতিনিধি ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৪:৫৯:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

মিরসরাইয়ের আ.লীগ সন্ত্রাসী ছকিনা ডাকাতের অত্যাচারে অতিষ্ট এক পরিবার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আওয়ামীলীগের এক নারী নেত্রীর অত্যাচারে অতিষ্ট এক পরিবার বিচার চেয়ে ধারে ধারে ঘুরছেন। আওয়ামীলীগের এই নারী নেত্রীর নাম ছকিনা বেগম। তিনি মিরসরাই পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কমিশনার পদে দুই বার নির্বাচন করে জামানত হারান। কিন্তু আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নাম বিক্রি করে তিনি মিরসরাই পৌর এলকায় মাদক কারবারী ও ভুমি দস্যুতার মসনদ গড়েন গত এক যুগ ধরে। তার ভুমি দস্যুতার বলি হয়ে কোটি টাকার সম্পতি  থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে প্রকৃত জমির মালিক।

ভুক্তিভুগি পরিবারের পক্ষে সেলিনা আক্তার নামে এক নারী লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানান,  আমার অসুস্থ বড় ভাই আবু রাশেদ ও আমাদের পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী মহিলা সন্ত্রাসী সকিনা ডাকাত ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি। আওয়ামীলীগের এই নারী সন্ত্রাসী অত্যান্ত দূর্ধর্ষ ও চতুর প্রকৃতির। সে গত দুই বার মিরসরাই পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড থেকে সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করেছে আওয়ামীলীগের দলিয় ব্যানারে।

সে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক ৭ বারের অবৈধ এমপি ও দুইবারের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের অত্যন্ত ঘণিষ্ট সহচর। আওয়ামীলীগের অবৈধ শাসনআমলে এই নারী সন্ত্রাসী মিরসরাই সদর এলাকায় ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাজা ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। অবৈধ মাদক কারবারীর কারার সুবাধে সে স্থানীয় প্রশাসন ও অসাধু রাজনৈতিক নেতাদের মাসিক মাসোহারা দিয়ে সকলের সাথে সখ্যতা বজায় রাখতো ।

ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন আওয়াজ করতো না। সেই সুযোগে সে আমাদের ওয়ারিশি সম্পদ আমাদের মরহুম দাদা আব্দুল আজিজ মিয়ার ধানপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে অবৈধ প্রবেশ ও দখল করার বার বার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উপর আওয়ামী অবৈধ ক্ষমতার অপব্যহারের মাধ্যে নির্যাতন, নিপীড়ন করে আসছে।  আমাদের ওয়ারিশি ও জোররগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ১৯৮৬ সালের দানপত্র নং ১০১১ এর মাধ্যমে মঘাদিয়া মৌজার, জেল নং ৭১ এর খতিয়ান নং ৫৯২৩ এর বিএস দাগ নং ৫৬১২৫ অন্দর সাড়ে ১৩ শতক জমির মালিক হয় আমার অসুস্ত বড় ভাই আবু রাশেদ এবং-৫৬১২৪ অন্ধর ১৮শতকের বাকি ওয়ারিশি মালিক আমরা ৫ ভাই বোন ।

১৯৮৬ সালের দানপত্রের মাধ্য প্রাপ্ত স্পত্তিতে  ১৯৮৭ সাল থেকে শরিফ হোটেল পরিচালানা করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে আওয়ামীলীগের অবৈধ সরকার গঠনের পরে ২০২০ সালে আমার ভাইয়ের শরিফ হোটেলে রাতের আধারে দুষ্কৃতিকারীরা আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। দোকান পুড়ে যাওয়ায় তৎতাকিলন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়ে পুড়ে যাওয়া স্থানে পুনরায় হোটেল নির্মান করতে গেলে নির্মানের প্রায় শেষ পর্যায়ে আমার ফুফাত ভাই ১) মাহফুজ আলম (৬০) , আলমগীর (৫৫) , ফারুক (৪৮) , জসীম (৪৬) সর্ব পিতা মৃত আবুল খায়ের ও মাহফুজের ছেলে রেদোয়ান (৩০) সং-মধ্যম তালবাড়িয়া, ১ নং ওয়ার্ড , মিরসরাই পৌরসভা স্বশরীরে এসে পুনরায় দোকান নির্মানে বাধা দান করেন। এবং তারা উপস্থিত একটি জাল দানপত্রের দলিল উপস্থাপন করেন ও আদালতের একটি নিষেদাজ্ঞা দেখান।

উপস্থিত মিরসরাই থানা পুলিশের তংকালিন উপরিদর্শক এমরান পাটোয়ারীর নির্দেশে দেশের আইন আদালত ও প্রশাসনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকি এবং তাদের উপত্থাপিত জাল দানপত্রের বিরুদ্ধে মাননীয় যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালত চট্টগ্রাম বরাবরে  একটি মামলা দায়ের করি। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। মামলা চলমান অবস্থায় বাদি বিবাদি উপভয় পক্ষকে বিরোধমান সম্পতিতে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি  করে মহামান্য আদালত। কিন্তু অত্যন্ত দুখের বিষয় স্থানীয় আওয়ামী মহিলা সন্ত্রাসী ছকিনা বেগম (৪৫) ও তার  ৪র্থ স্বামী নজরুল ইসলাম (৪৮) বারৈয়ারহাট তৃতীয় লিঙ্গের ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে বিরোধমান সম্পত্তিতে অবৈধ প্রবেশের অপচেষ্টা চালায়। অবৈধ প্রবেশে আমরা পারিবারিক ভাবে বাধা দিতে গেলে আমারদের উপর হামলা চালানো হয়। তাদের হামলায় আমার বড় বোন নাজনীন আক্তার মৌসুমি (৩২), আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৩৩) আহত হয় যাহার ভিড়িও এখনো আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।  হামলা ও আহতের ঘটনায় স্থানীয় স্বাস্থ কম্পলেক্সে চিকিৎসা শেষে আমরা মিরসরাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মিরসরাই থানা তদন্ত করে হামলা ও আহতের সত্যতা পেয়ে মিরসরাই থানা সাধারণ ডায়েরী ২৭১/২০২০ নথি ভুক্ত করে আদালতে প্রেরণ করে। আদালতের নির্দেশে মিরসরাই থানা পুলিশ ননএফআইআর নং ৬৩/২০২০ দায়ের করে। মিরসরাই থানার এফআইআর এর ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা হাকিমের আদালতে হাজির হয়ে বিবাদিগন ভবিষ্যতে এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করবেনা মর্মে মুচ লিখা দিয়ে আসে। গত ১২ আষ্ট ২০২৪ ইং তারিখে ছাকিনা ও তার স্বামী নজরুল ইসলাম পুনরাং ঝামেলা করতে চাইলে আমারা বাংলাদেশ সেনাবাহীনি মিরসরাই ক্যাম্পের দ্বারস্থ হই। সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে গিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসী ছকিনা বেগম ও তার স্বামী নজরুল ইসলাম পুনরায় কোনপ্রকার সংঘাত কিংবা ঝগড়া বিবাদ করবে না ও আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত বিরোধমান সম্পত্তিতে কোন প্রকার অনুপ্রবেশ করবে না মর্মে মুছলেখা দেয়।

কিন্তু সর্ব শেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ইং শুক্রবার দুপুর ১টার সময় সবাই যখন জুমার নামাজের জন্য মসজিদ মুখি সেই সুযোগে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারী ছকিনা ডাকাত, ছকিনার মেয়ে আখি ও  আমার ফুফাত ভাই নজরুল আমার ভাইয়ের হোটেলের দারজায় সম্পত্তিটি তাদের উল্লেখ পুর্বক একটি ব্যানার দেয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দিতে গেলে তারা আমার উপর চড়াও হয় ও আমাকে লাথি কিল ঘুষি মেরে নিলাফুলা জখম করে। এসময় আমি তাকে প্রতিরোধ করতে গেলে সে ঘটনাস্থলে একটি টিএনটির পিলার জড়িয়ে ধরে থাকে।

এসময় তার ছোট ছেলে হাতে করে একটি ছোট রশি নিয়ে তার হাতে দিলে সে নিজেকে রশিতে জড়িয়ে ফিলারের সাথে লেগে থাকে। আমরা তখন বুঝতে পারিনাই তার এই চতুরতার কারন। পরের দিন দেখতে পারি কিছু পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হয়েছে যে মধ্যযুগিয় কায়দায় কারেন্টের পিলারের সাথে বেধে নারী নির্যাতন। যাহা অত্যন্ত মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এটি যে তার পরিকল্পিত সাজানো ঘটনা তা উৎসুক জনতার করা একটি ভিড়িও দেখে পরবর্তীতে আমরা বুঝতে পারি। স্থানীয়দের কাছ থেকে সংগৃহীত ঘটনার একটি ভিড়িও আমাদের কাছে আছে যা সংবাদ কর্মীদের কাছে আমরা সরবরাহ করেছি।

আমরা উপরোক্ত ঘটনায়ও আমাদের সম্পতির বিষয়ে সঠিক সুরাহ চাই এবং ভুমি দস্যু আওয়ামী সন্ত্রাসী ছকিনার উপযুক্ত বিচার চাই। উক্ত বিষয়ে ছকিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে উত্তেজিত হয়ে জানান, ২০২০ সালে কখনর হিজলা দিয়ে তাদের উপর হামলা করেছি তাই বলে ২০২৫ সালে এসে আমাকে পিলারের সাথে বেধে নির্যাতন করবে? আপনাদেরও মা বোন আছে আপনাদের সাথে এরকম করলে আপনারা কি করতেন। আমি যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করি তাহলে আমার বিচার করার জন্য আইন আদালত আছে তারা কেন আমার বিছার করবে। আদালতে মামলা হয়েছে দুটি রায় আমার পক্ষে এসেছে। তাই আমি জায়গা দখল করতে গিয়ে ছিলাম।

মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুর রহমান জানান, গত শুক্রবারে সম্পত্তি সংক্রান্ত মহিলাদের দুটি পক্ষের বিবাদকে কেন্দ্র করে থানায় দুটি পাল্পাপাল্টি অভিযোগ এসেছে। আমরা অভিযোগদুটি আমলে নিয়ে জিড়ি আকারে গ্রহন করেছি। বর্তমানে তদন্ত চলছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content