প্রতিনিধি ৩০ মে ২০২৪ , ৫:১২:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের চালক ও হেলপার কে মারধর করে ২০ হাজার টাকা ডাকাতির ১ দিন পর দুই ডাকাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।
আটককৃতরা হলো ৩ নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড খিলমুরালি এলাকার জাফর উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম প্রকাশ সজীব (২০) ও একই এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেন (২৫)। বুধবার ( ২৯ মে) রাতে চিনকি আস্তানা বটগাছতল এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকের পর স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়ে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে।
ঘটনায় বিবরণে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৩ টির সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিনকি আস্তানা উদিল্লা টিলা নামক স্থানে একটি ট্রাক রাস্তার পাশে দাঁড়ালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ৬ থেকে ৭ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল ট্রাকের চালক ও হেলপার কে অস্ত্রের মুখে মারধর করে তাদের কাছে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি পার্শ্ববর্তী চয়েস বাস টার্মিনালের নাইট গার্ডদের নজরে আসে। উপস্থিত ডাকাতদের ধাওয়া করে ধরতে না পারলেও পরদিন বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের সহায়তায় চিনকি আস্তানা রেল স্টেশনের বটগাছতল এলাকায় তাদের ২ জনকে দেখতে পেয়ে আটক করা হয়। স্থানীয়রা আটককৃত স্থানীয় এই দুই ডাকাত সদস্যদের উত্তম মাধ্যম দিয়ে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
স্থানীয়রা জানান, খিলমুরালি, হিংগুলী, সোনাপাহাড় এলাকা এখন ডাকাতদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। গত ১ বছরে কয়েকশ ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায় মাত্র কয়েকটি। র্যাব পুলিশ গত এক বছরে প্রায় অর্ধশতাধিক ডাকাত সদস্যদের আটক কিংবা গ্রেফতার করা হলেও আটকের কয়েকদিন পরেই তারা জামিনে এসে ফের ডাকাতি শুরু করে।
শত শত ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও আইনি ঝামেলা এড়াতে মামলা করতে চায়না কেউ। স্থানীয়রা আফসোস করে বলেন দিনের বেলায় এসব ডাকাতরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় থাকে আর রাতের বেলা ডাকাতি করে। এদের বিরুদ্ধে কি বললেই তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে মামলা হামলা করে ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলে না প্রতিবাদ করে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আফসার মেম্বার বলেন, আমি একটি ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলাম।
তাই ঘটনা স্থলে ছিলাম না। কিন্তু যারা ডাকাতি করেছে তারা একজন বারৈয়ারহাট পৌরসভা থেকে এখানে বাড়ি করেছে। অন্যজন রাস্তার পশ্চিমপাশের লোক। তবে এটা সত্য যে স্থানীয় লোকজন জড়িত না থাকলে প্রতিনিয়ত এখানে ডাকাতি হওয়ার কথা নয়। বাহির থেকে লোক আসলেও স্থানীয় দুই চার জন জড়িত রয়েছে ডাকাতির সাথে।
র্যাব পুলিশ গ্রেফতার করেও এখানে ডাকাতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেনা। স্থানীয়রা ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাস্টার বলেন, খিলমুরালি থেকে ২ ডাকাত আটক হয়েছে বলে শুনেছেন তবে বিস্তারিত জানেন না।জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ জানান, ট্রাকে ডাকাতির ঘটনায় ট্রাক চালক থানায় আসলেও তারা মামলা করতে ইচ্ছুক নয়।
তাই আটককৃত ডাকাতদের ২ দিন আগের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই মামলায় তারা ডাকাতির আসামি ছিল।