প্রতিনিধি ১২ আগস্ট ২০২৪ , ৮:১৪:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের সরকারি ভবন, থানা ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলার পর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে পুলিশ বাহিনীর সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে যান পুলিশ কর্মকর্তাসহ সদস্যরা। ঘটনার ৭ দিন পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় যোগ দিয়েছেন সাভার থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেল ৩ টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানের উপস্থিতিতে এই সাভার থানায় যোগদান করে পুলিশ। এসময় ছাত্র-জনতাসহ সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক নাজমুল ইসলাম বলেন, পুলিশ যে আস্থাহীনতার জায়গাটা তৈরি করেছিল, সেই আস্থার জায়গাটায় যেন তাদের ফিরে আসে। তারা যেন জনগণের জন্য কাজ করে। জনগণ যেন কোন হয়রানির স্বীকার না হন সেই বিষয়টি পুলিশ দেখবেন। আমরা দেখতে পেলাম দুষ্কৃতিকারীরা আবার সরব হচ্ছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা আবার সরব হচ্ছেন, প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনের ভাইদের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে তারা যেন দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে যারা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন।
এসময় সাংবাদিকদের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান পিপিএম বলেন, সাভারে দুষ্কৃতিকারীরা আর কোন ধরনের যেন সুযোগ না পায় এ জন্য আমরা এখন থেকে কাজ করব। আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। আমাদের আশুলিয়া বাইপাইল, নবীনগর মোড়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে৷ আশা করছি খুব দ্রুতই আমাদের আমিনবাজার, হেমায়েতপুর এবং স্ট্যান্ড এলাকায় আমাদের ছাত্রদের পাশে থেকে আমরাও কাজ শুরু করব৷
ইতোমধ্যে সকল থানায় অফিসার ইনচার্জ যোগদান করেছেন। কাজ শুরু করেছেন । শুধুমাত্র আমাদের সাভারের সর্বসাধারণ বিশেষ করে যারা এখানকার সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে বসেছি। আমরা এলাকার যাঁরা গণ্যমান্য ব্যক্তি তাদের সাথে বসেছি। বিভিন্ন স্কুল শিক্ষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ সমন্বয় করে এসেছেন আমাদের সাথে কথা বলেছেন । আমরা সকলেই কথা বলেছি এবং আশ্বস্ত করেছে। তারা আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন তাই কোনও ভীতিকর পরিস্থিতি এখন নেই। ভীতি দূর করতে চাই। সাভার শান্তিপূর্ণ সাভারে রূপান্তরিত করতে চাই।
থানার কার্যক্রম শুরু হবে কবে থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই চালু করতে হবে তবে একটু সময় লাগবে। আপনারা দেখেছেন যে অফিসের সবকিছু পুড়ে গিয়েছে সেটাকে একটু গুছিয়ে নিতে সময় লাগবে। ততটুকু আপনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই এটি আমরা সাদা কাগজে হলেও সেটি আমরা শুরু করব।
পুলিশ সদস্য হতাহতের তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাভার থানায় হত্যাযজ্ঞ বা এরকম কোনো কিছু আলামত পাইনি। এরপরেও আমরা পর্যায়ক্রমে জানতে পারবো। আসলে অনেকেই এখান থেকে চলে গিয়েছেন, বাড়িতে গিয়েছেন আমরা তাদের সাথে ইতোমধ্যেই যোগাযোগ করেছি। পুরো বিষয়গুলো আইনগত ভাবে আমরা দেখব। আমরা বিশ্বাস করি যে এটি সাভারের জনগণ না, এটি আমাদের ছাত্ররাও না। এটি নিশ্চয়ই দুষ্কৃতিকারী, যাঁরা সেই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে সকালে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান শিক্ষার্থীরা। বাইপাইল ও নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা যায়। এসময় শিক্ষার্থী, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্যদের ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করে। সেই সাথে পুড়ে যাওয়া ট্রাফিক বক্স পরিষ্কার ও রং করে দেয় শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গ গত ১০ই আগস্ট থেকে সেনাবাহিনী ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় সাভারের আশুলিয়া থানা পুলিশ যোগদেয়। এসময় অসুস্থ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ উপ পরিদর্শকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।