ঢাকা

৮ হাজারের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ক্রয় ২৭ হাজারে

  প্রতিনিধি ৮ অক্টোবর ২০২৩ , ৮:১৯:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

৮ হাজারের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ক্রয় ২৭ হাজারে

বালিশ কান্ডের পর এবার ভ্যাকুয়াম কান্ড!! টুঙ্গিপাড়ায় ৮ হাজারের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ২৭ হাজারে ক্রয় করার খবর এখন টক অফ দ্যা টাউন।

বাজারে মিয়াকো কোম্পানির একটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার মেশিন  অর্থাৎ ফ্লোর ধুলাবালি শোষণ ও পরিস্কার যন্ত্র বিক্রি হয় ৮ হাজার ৫শ’ টাকায়। একই মডেলের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার সরকারি একটি কলেজের জন্য কেনা হয়েছে ২৭ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকায়। যার সঙ্গে বাজার দরে আকাশ পাতাল ফাঁড়াক।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের জন্য মিয়াকো কোম্পানির এমন ৪টি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ক্রয় করে দাম দেখানো হয়েছে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৪০০ টাকা। ৭০০ টাকার ফুটবলের দাম দেখানো হয়েছে ২ হাজার ৪ শ’ টাকা। ২০ টাকার বাল্ব (বৈদ্যুতিক লাইট) ক্রয় করা হয়েছে ৪০০ টাকা দরে। স্থানীয় বাজার থেকে সিঙ্গারা কিনে গাজীপুরের একটি খাবারের দোকানের ক্যাশ মেমো দিয়ে বিরিয়ানির টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। এমন বেশ কয়েকটি খাতে মালামাল ক্রয় করে ভুতুরে  বিল ভাউচারে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নুরুল হকের বিরুদ্ধে। তবে অধ্যক্ষের দাবি সবকিছু বিধি মোতাবেক করা হয়েছে।

টাকায় ক্রয় করা হয়েছে । ৩০০ টাকার পাপোশের দাম ১ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। এছাড়া আরো ১০ টি খাতে মালামাল ক্রয়ে  মনগড়া বিল ভাউচার করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ।

ওই কলেজের ইনেসটেক্টর (সংযুক্ত) ও ক্রয় কমিটির সদস্য উত্তম রায় বলেন, অধ্যক্ষ আমাকে ক্রয় কমিটির সদস্য করেছেন। মালামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। অধ্যক্ষ তার পছন্দের ঠিকাদারের কাছ থেকে এসব মালামাল ক্রয় করেছেন। ক্রয় কমিটির সদস্য হিসেবে আমাকে অধ্যক্ষ সাক্ষর করতে বলেছে, তাই  আমি ভাউচারে সাক্ষর করেছি।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. নুরুল হক বলেন, সব বিধি মেনে ও ক্রয় কমিটির মতামতের ভিত্তিতে মালামাল কেনা হয়েছে। ঠিকাদারের মাধ্যমে গাদিচুক্তিতে পণ্য কেনা হয়েছে। তাই কোনটায় দাম বেশি ধরা হয়েছে, আবার কোনটায় দাম কম ধরা হয়েছে। বিল ভাউচারে প্রতিটি মালামালের দাম বেশি ধরা হয়েছে, কম কেন ধরা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, তখন আমি খেয়াল করিনি, কিন্তু এখন দেখছি প্রতিটি মালামাল বাজারের চেয়ে বেশি দাম ধরেছে। না দেখে বিল ভাউচারে সই করা ভূল হয়েছে।

এবিষয়ে অর্থনীতিবিদ খসরুল কবীর বলেন, এটি রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাতের একটি কৌশল মাত্র।  এসব কর্মকর্তাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগে থেকেই চুক্তি থাকে । সেখান থেকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা নিজের পকেটে নিয়ে নেন এসব কর্মকর্তারা। এটা রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় ও আত্মসাত ছাড়া আর কিছুই নয়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গোপালগঞ্জ জেলা কমিটির  সভাপতি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, এমন প্রবনতা আমাদের সমাজে বিদ্যমান। এদের আইনের আওতায় এনে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by