রংপুর

উলিপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অবরুদ্ধের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

  প্রতিনিধি ১১ মার্চ ২০২৪ , ৭:০১:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অবরুদ্ধের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের পাঁয়তারা ও যাতায়াতের রাস্তা প্রাচীর দিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ করে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ বীরমুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে অবরুদ্ধ বীরমুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক উলিপুর পৌরসভার জোদ্দারপাড়াস্থ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৬ দশকের বেশি সময় ধরে বীরমুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক ও তার ছোট ভাই আকবর হোসেনসহ ৭টি পরিবার উলিপুর জোদ্দারপাড়া এলাকায় ২৬ শতক জমি ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে বসবাস করে আসছেন।

হঠাৎ করে ১৬ জানুয়ারি রাখিবুল সরদার ও রাশেদ সরদার গং ২৫-৩০ জন বহিরাগত লোক নিয়ে জোর পূর্বক আমাদের বাড়ি যাতায়াতের রাস্তার দুটি পাকা (গেটের) দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করেন। এরপর তারা টিনের বেড়া দিয়ে আমাদের বসত বাড়ির প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। তাদের হুমকি ধামকিতে আমরা নিরুপায় হয়ে ইউএনও এবং ওসিসহ স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করি।

অভিযোগ করায় জবর দখলকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রাখিবুল সরদার, রাশেদ সরদার ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিপা সরদারের নেতৃত্বে ২০ জানুয়ারি অনেক লোকজন নিয়ে এসে আমাদের বসত বাড়ির দুই অংশের ৫টি শয়নকক্ষ ও ২টি বাথরুম ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় আমাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২৬ শতক জমির মধ্যে ১০ শতক জমি জবরদখল করে নেয় এবং ইটের প্রাচীর দিয়ে আমাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে সম্পূর্ণরূপে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

বর্তমানে আমরা ৭টি পরিবার প্রতিবেশীদের বাড়ির ভিতর দিয়ে যাতায়াত করছি। পরিবারের লোকজনসহ আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসনের যথাযথ কর্তৃপক্ষসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের ছেলে তৌহিদুল হক লিটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী তৌহিদা বেগমসহ অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরা।

সম্মেলনে উপস্থিত বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, আবু হানিফ, আব্দুস ছাত্তার, কফিল উদ্দিন, নজির হোসেন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা আরও বলেন, অবিলম্বে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি না মিললে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবো। এ বিষয়ে রাখিবুল ইসলাম সরদার বলেন, ওই জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলমান ছিল। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় ছিল।

মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের কাছে ভাড়া নিয়ে ঘর ছাড়তে না চাইলে ১৯৯৩ সালে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের মামলা করি আমরা। দীর্ঘদিন মামলা চলাকালীন সময় একাধিকবার রায় পাই আমরা। সেই রায়ের ভিত্তিতে আদালত আমাদের জায়গা বুঝে দেন। সেই জায়গার ভিতরে তাদের গেট এবং বসতঘর থাকায় তা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অবরুদ্ধ পরিবার গুলোর যাতায়াতের রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। মামলার রায় নিয়ে এসে জায়গা বুঝে নিক তারা।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিপা সরদার বলেন, তারা আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে জায়গা জবর দখলের মামলা করেছেন। আদালত যে রায় দিবে আমরা তা মেনে নিব।উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মর্তুজা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, যেহেতু বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ তাই দ্রুতই দুই পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content