প্রতিনিধি ১৩ জুন ২০২৪ , ৫:৪৭:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
আজ আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস। “মোদের একটাই লক্ষ্য “রোগী ও অসহায় পরিবারের মুখে হাসি চাই”। এই শ্লোগান নিয়ে মানবতার সেবায় ২০২০ সালে ২২ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে দিনাজপুর রক্তদান সমাজ কল্যান সংস্থা। তিল তিল করে গড়ে উঠা এ সংস্থাটি এখন দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এ যাবৎ ৮ হাজার মুমূর্ষ রোগীকে রক্তদান করেছে। রাত ২ টা, ৩ টাসহ যে কোন সময়ে প্রয়োজনে ফোন করলেই পাচ্ছে বিনামুল্যে রোগীর জন্য রক্ত। একটি মানুষকে রক্ত দিয়ে একটি পরিবারকে রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে এই দিনকে পালন করে আসছে এই সংস্থা।
দিনাজপুরে বিভিন্ন ক্লিনিক, সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর জন্য রক্ত দিতে এই সংস্থাটি সমসময় প্রস্তুত থাকে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মুমুর্ষ রোগীদের রক্ত দিয়েই সেবা করাই এই সংস্থার প্রতিটি সদস্যের শান্তি। কার্যক্রম শুরুর ৬মাস পরেই দিনাজপুরের পাশা-পাশি তারা ১০টি জেলায় (দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, বগুড়া, গাজীপুর, ঢাকা, ঠাকুরগাও, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রক্ত সংগ্রহ বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রথম ১ বছরে ১৫০০ জন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিলেও বিভিন্ন জেলা ও দিনাজপুর সহ বর্তমান তারা প্রায় ৮ হাজার মুমূর্ষু রোগীকে বিনামূল্যে রক্তসংগ্রহ করে দিয়েছে। অসহায় দুস্থ রেগীর রক্তের প্রয়োজনে তারা রক্তের ব্যাগ নিজেরাই কিনে দেয় ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ক্রসমিসিং ফ্রি করে দেয়। রক্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে দিনাজপুরেই তাদের ১০০ জনেরও বেশি রক্তযোদ্ধা ও রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থার অনলাইন সদস্য সংখ্যা ৮ হাজার।
সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্ঠা দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরুপ বকসী জানান, একঝাক যুব যুবতী নিয়ে এই সংস্থাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। রক্ত দেয়াই যেন এদের নেশায় পরিনত হয়েছে। এ ব্যাগ রক্ত একটি মানুষকে শুধু নয়, একটি পরিবারকে রক্ষা করে।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রবিউল ইসলাম রাজু জানান, দিনাজপুরে অত্যন্ত রক্তের অভাবে কোনো রোগী প্রাণ হারাবেনা এই প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি এবং সেই সাথে অসহায় পরিবার, এতিমখানা, মসজিদ ও দুর্যোগ কবলিত পরিবার, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অসহায় পরিবারদের সহযোগিতা এবং ভারসাম্যহীন মানুষদের সার্বিকভাবে এ সংগঠনের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল আলম।
জানা যায়, এক মুমূর্ষ রোগীকে রক্তের প্রয়োজনে রবিউল ইসলাম রাজুর মাধ্যমে আশরাফুল ইসলাম গিয়ে সেই রোগীকে দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে রক্ত দিয়ে আসে এবং এতে তাদের মাঝে একটা আনন্দ ও তৃপ্তি কাজ করে। এর পরেই রাজু চিন্তা করেন ১জন রোগীকে যেহেতু রক্ত সংগ্রহ করে দিতে পেরেছে আরো মুমূর্ষু রোগীর পাশে থাকা প্রয়োজন। এরই ধারাবাহিকতায় আশরাফুলকে সাথে নিয়ে শুরু করে রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থা।
রবিউল ইসলাম রাজু সংগঠনটির সভাপতি ও আশরাফুল সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়। দিনাজপুর ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় তাদের সদস্য ছিটিয়ে ছটিয়ে আছে। সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্র ও চাকরিজীবি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে নবেল বিজয়ী বিজ্ঞানি কার্ল লান্ডস্টাইনার আবিস্কার করেন এ, বি, ও, এবি রক্ত আবিস্কার করেন। রক্তদান একটি মহৎদান। রক্তদান করলে শরীরে কোন ক্ষতি হয়না। এমনিতে রক্তকনিকা নির্দিষ্ঠ সময়ের পর নষ্ঠ হয়ে যায়। তাই রক্তদান করুন রোগীর প্রাণ বাঁচান।