প্রতিনিধি ১৫ আগস্ট ২০২৪ , ৪:৪২:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
১৫ আগস্টে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের রাজপথ দখলে থাকতো আওয়ামী লীগের। জাতীয় শোক দিবসের ব্যানারে এদিন দলটি নানা কর্মসূচী নিয়ে সরব থাকতো। ক্ষমতার শেষ কয়বছরে তারা মাসব্যাপী নানা আয়োজনে শেখ মুজিবসহ তার পরিবারের সদস্যদের খুনের দিনটি স্মরণ করা হতো। এটা জাতীয় শোক দিবস হিসেবেও এতদিন পরিচিত ছিলো।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর আওয়ামী লীগ সারাদেশে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। তাই বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর কোথাও আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো কর্মসূচী দেখা যায়নি। রাজপথ দখলে ছিলো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপি, জামায়াত নেতাকর্মীদের দখলে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে গণহত্যকারী হাসিনার ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর অন্তর্গত কোতয়ালী, নিউমার্কেট, বহদ্দারহাট মুরাদপুরসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের স্লোগানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো,“খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই, শিক্ষার্থীদের ওপর গণহত্যার বিচার চাই, খুনি হাসিনার ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না, শেখ হাসিনার দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান”। রাজপথে কোথাও দেখা মেলেনি আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীকে। সকালে নিউমার্কেট এলাকায় দেখা গেছে পুরো এলাকাটি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। চার রাস্তার সংযোগস্থলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের নানা মিছিল, শ্লোগান, অবস্থান কর্মসূচীর ফলে নগরজুড়ে সীমাহীন যানজট তৈরী হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ ই আগষ্টের সাধারন ছুটি বাতিল করা হয়।
এদিকে ছাত্র-জনতার ওপর পরিচালিতগনহত্যার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের দাবিসহ চার দফা দাবিতে চট্টগ্রামে সর্বাত্বক অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবিগুলো হলো ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যাবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন, সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত ডাকাতি ও লুন্ঠনের মাধ্যমে গনঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করেছে তাদের বিচার নিশ্চিত করা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা এবং হত্যাকান্ডের বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদ কায়েমের চেষ্টা করেছে, তাদেও দ্রুততম সময়ে অপসারন ও বিচার নিশ্চিত করা এবং প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক বক্তৃতা করেন। অপরদিকে নগরীর প্রত্যেক থানার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মসূচী দিয়েছে বিএনপি জামায়াত। তারা নগরীর বিভিন্ন স্পটে মাইক লাগিয়ে মাইক লাগিয়ে পাহারা বসিয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। এসময় নগরীর কোথাও আওয়ামী লীগ কিংবা তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি।