প্রতিনিধি ১৯ আগস্ট ২০২৪ , ৬:১৩:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষার স্থাপিত স্পার বাঁধের একাংশ ধ্বসে গেছে। প্রায় ৭ বছর পূর্বে ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার চর বজরা এলাকায় স্পার বাঁধটি নির্মাণ করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর পশ্চিম দিকে অপরিকল্পিত ভাবে বেক্সিমকো গ্রুপের স্যোলার পাওয়ার প্লান নামে একটি স্থাপনা নির্মান করায় প্রতি বছর এ এলাকায় নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনেক বসতভিটা বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চর বজরা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীতে ২শ’ মিটার দৈর্ঘ্যরে বন্যা নিয়ন্ত্রণে একটি স্পার বাঁধ (গ্রোয়েন) নির্মাণ করা হয়।
এরপর থেকে বাঁধটি ধীরে ধীরে ভ্রমণপিপাসু মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন উৎসবে শত শত বিনোদন প্রেমী বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ এখানে ঘুরতে আসেন। এদিকে সম্প্রতি নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধটির দক্ষিন দিকের প্রায় ৫০ মিটার অংশ ধ্বসে গেছে।
সরেজমিনে সোমবার (১৯ আগষ্ট) ওই এলাকায় গিয়ে কথা হয় শাহিনুর মিয়া (৪২), হাবিবুর রহমান (৫৫), আব্দুল মালেক (৬০), রুহুল আমীন (৪৫)সহ অনেকের সাথে তারা অভিযোগ করে বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙ্গন থেকে এই এলাকাটি রক্ষার্থে বাম তীরে পাউবো বাঁধটি নির্মানের পর নদীর পশ্চিম দিকে পাশ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর উপকুলে শত শত একর জমির উপর অপরিকল্পিত ভাবে বেক্সিমকো গ্রুপের একটি স্যোলার পাওয়ার প্লান স্থাপনা নির্মান করা হয়।
অপরিকল্পিত ভাবে পাওয়ার প্লানটি নির্মানের ফলে প্রতি বছর এ এলাকায় নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের এই বাঁধটির কিছু অংশ ধ্বসে গেছে। ভাঙ্গন রোধ না করা গেলে স্থানীয় ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪টি মসজিদ, ৫ টি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার ও কয়েক শত একর আবাদী জমিসহ ঘর-বাড়ি গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপের স্যোলার পাওয়ার প্লানটি আমাদের জন্য মরনফাঁদ। এটির কারনে আমাদের এলাকায় নদী ভাঙ্গন বেড়েই চলছে। বর্তমানে বাঁধটির একাংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় বাকী বাঁধটি রক্ষার্থে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষায় স্পার বাঁধের একটি অংশ ধ্বসে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বাঁধ রক্ষায় সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। বাঁধটি রক্ষায় যত পরিমান ব্যাগ লাগবে তা সেখানে ফেলা হবে।