প্রতিনিধি ২৯ অক্টোবর ২০২৪ , ৩:৪০:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা ও মাকে কুপিয়ে আহত করেছে এক যুবলীগ নেতা। সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দাবাদ এলাকায় নাসির উদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধু বিউটি আক্তার (৩০) দুই সন্তানের জননী। তিনি উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জাফরাবাদ এলাকার শফিকুল ইসলামের মেয়ে। ঘাতক স্বামীর নাম জমির উদ্দিন। তিনি উপজেলার সৈয়দাবাদ এলাকার মৃত নাসির উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে। এ ছাড়াও তিনি উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। আহত মায়ের নাম শামসুন্নাহার (৭০)।
ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দল উপস্থিত হলে জমির উদ্দিন তার মায়ের গলায় ছুরি ধরে- তাকে আটক করা হলে মাকে হত্যা করবে বলে হুমকি প্রদান করে। পরে প্রায় ৫ ঘণ্টা আসামির বাড়ি ঘিরে রেখে রাত ৯টার দিকে প্রথমে মাকে উদ্ধার করে, পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘাতক জমির উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
গুরুতর আহত মা শামসুন্নাহারকে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) প্রেরণ করেন।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে ঘাতক স্বামী জমির উদ্দিন চট্টগ্রাম শহর থেকে বাড়িতে এসে স্ত্রীকে নিজ রুমে নিয়ে মারধর করতে থাকে। মা বাঁধা প্রদান করলে মা ও স্ত্রীকে রুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করে, মাকে মাথায় ও হাতে কুপিয়ে আহত করে।
এলাকাবাসীর দাবি, ঘাতক জমির উদ্দিন বিগত কয়েক মাস যাবত মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তবে এই দাবি নাকচ করে নিহতের মা হালিমা বেগম জানান, গত পনের বছর আগে জমির উদ্দিনের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই টাকার জন্য মেয়েকে আমাদের বাড়িতে পাঠাতো সে। বিগত একমাস আগেও ব্যবসার জন্য বিশ হাজার টাকা দিয়েছি তাকে। এরপর গত শনিবার আবারও টাকার জন্য আমার মেয়েকে আমাদের বাড়িতে পাঠায় সে। কয়েকদিন পরে দিতে পারবো জানিয়ে মেয়েকে ফেরত পাঠাই। টাকা নিয়ে না যাওয়ার কারনে গত দুইদিন আমার মেয়ের সাথে জমির উদ্দিনের ঝগড়া হয়। ঘটনার দিন আমার মেয়েকে প্রচন্ড মারধর করে জবাই করে হত্যা করে জমির উদ্দিন। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমরান আল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, “দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করে আসামি জমির উদ্দিনের অবরুদ্ধ আহত মাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। পরে আসামি আটক ও নিহতের লাশ উদ্ধার করি। এবিষয়ে নিহতের ছোট ভাই মিনহাজ আলম বাদী হয়ে নিহতের স্বামী জমির উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।” পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।