চট্টগ্রাম

এক যুগেও পাকা হয়নি ইটের রাস্তা, চন্দনাইশের জনসাধারণের দুর্ভোগ!

  প্রতিনিধি ৯ নভেম্বর ২০২৪ , ৫:২১:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

এক যুগেও পাকা হয়নি ইটের রাস্তা, চন্দনাইশের জনসাধারণের দুর্ভোগ!

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নে একটি পাকা সড়কের জন্য ভোগান্তির শেষ নেই দুইটি ওয়ার্ডের জনসাধারণের পাশাপাশি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৬৫ ঘরের বাসিন্দাদের। সড়কটিতে এক যুগ আগে বিছানো ইট উঠে গিয়ে দৈনন্দিন চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

হাশিমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খানদিঘীর পাড় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে শিকারীপাড়া হয়ে হাশিমপুর রেলস্টেশন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝুর দোকান হয়ে আলী শাহ্ (রহ.) মাজার পর্যন্ত সড়কটির তিন কিলোমিটার অংশে করুণ অবস্থা। সড়কটিতে যে পর্যন্ত ইট বিছানো রয়েছে, তাও নির্মাণ হয়েছে প্রায় এক যুগ আগে। বর্তমানে সেই ইট প্রায় উঠে গেছে। খানাখন্দে ভরা সড়কে সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন। এ পথ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ ছাড়া প্রায় সময় ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এই সড়কটি দিয়ে হাশিমপুর ইউনিয়নের ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জনসাধারণের পাশাপাশি হাশিমপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৬৫ ঘরের বাসিন্দারাও প্রতিদিন চলাচল করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানানো হলেও বার বার সড়ক সংস্কারের আশ্বাস পাওয়া গেছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি পাকা করা হলে এই দুই ওয়ার্ডের মানুষের পাশাপাশি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৬৫ ঘরের বাসিন্দাসহ সবাই উপকৃত হবেন বলে জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু তাহের সওদাগর বলেন, “বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলে সড়কটি দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না। সড়কটি দিয়ে রিকশা-ভ্যানও চলতে পারে না। এর প্রধান কারণ হলো, সড়কটির বিভিন্ন স্থান খানাখন্দে ভরা। কোথাও রয়েছে বড় বড় গর্ত। বর্ষার সময় এই সড়কে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা এড়াতে

সড়কটি কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন করা প্রয়োজন।”

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, “সড়কটি দিয়ে জরুরি কোন রোগী নিয়ে গেলে রিকশার অতিরিক্ত ঝাঁকুনির কারনে রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাছাড়া গর্ভবতী কোন নারীকে এই রাস্তা দিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। রাস্তার বেহাল দশার কারনে রিকশা চালকেরা দ্বিগুন ভাড়া দেওয়া ছাড়া আসতে চায় না।”

বাহুলিয়া পাড়ার স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, “সড়কটিতে ইটের সলিং হয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে। কিন্তু বর্তমানে সড়কের বিভিন্নস্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। নিজেদের খেতের উৎপাদিত সবজি বাজারে নিতে বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। না হলে ভ্যান চালকেরা যেতে চায় না।”

৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, “রাস্তাটি বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একযুগ আগে ইট বিছানো রাস্তাটির অধিকাংশ স্থানে ইটের কোনো অস্তিত্ব নেই। মাঝেমধ্যে কিছু অংশে থাকলেও বেশির ভাগ স্থানেই ইট নেই। উপজেলা প্রকৌশলীকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হলেও রাস্তাটি অদ্যাবধি সংস্কার হয়নি। দ্রুততম সময়ে রাস্তাটি পাকা করলে হাজারো মানুষ উপকৃত হবে।”

৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস মিঞা বলেন, “রাস্তাটির অবস্থা খুব খারাপ, মানুষ খুব কষ্টে আছেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছাড়া আর কোনো যানবাহন এই পথে চলাচল করে না। রাস্তার যে অবস্থা, তাতে রিকশায় উঠলে কী পরিমাণ যে ঝাঁকি সইতে হয়, তা বলার নয়। রাস্তাটি নির্মাণে ব্যবহৃত ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। জনদুর্ভোগ লাঘবে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বেশ কয়েকবার অবহিত করেছি। তিনি সরেজমিনে এসে মেপেও নিয়েছেন, তবে অদ্যাবধি কাজ শুরু হয়নি।”

এবিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের চন্দনাইশ উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ জুনাইদ আবছার চৌধুরী বলেন, “ওই রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। একযুগ আগে বিছানো ইটের রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। কয়েক মাস আগে বৃহত্তর চট্টগ্রাম-৪ প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠিয়েছি। সেটি একনেকে পাস হয়ে আসলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবো।”

আরও খবর

Sponsered content