বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ঋণমান ‘স্থিতিশীল’ থেকে এবার ‘নেতিবাচক’

  প্রতিনিধি ১৮ নভেম্বর ২০২৪ , ৭:৫৯:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের ঋণমান ‘স্থিতিশীল’ থেকে এবার ‘নেতিবাচক’

যুক্তরাষ্ট্রের রেটিং এজেন্সি মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান ‘বি-ওয়ান’ থেকে কমিয়ে ‘বি-টু’তে এনে বলছে, এর ফলে পূর্বাভাসের অবনতি ঘটেছে। অর্থাৎ এ পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ অবস্থায় চলে গেছে। একই সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি ঋণজারিকে ‘নট-প্রাইম’ শ্রেণিভুক্ত করেছে। 

আজ সোমবার মুডিস তাদের নতুন রেটিং প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশের রেটিং কমানো প্রসঙ্গে সংস্থাটি বলছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পর সরকার পরিবর্তনের ফলে উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি, নিম্ন প্রবৃদ্ধি সরকারের তারল্যের ঝুঁকি, বৈশ্বিক ভঙ্গুরতা এবং ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।

মুডিস জানায়, উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি ও নিম্ন প্রবৃদ্ধিকে তুলে ধরেছে এই অবনমন, যার ফলে সরকারের নগদ অর্থসংকট তৈরি হতে পারে। এতে ব্যাংক খাত এবং বাহ্যিক লেনদেনেও দুর্বলতা তৈরি হবে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার দরুন এসব ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের।

মুডিস বলেছে, চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দুর্বল হয়ে পড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের সরকারকে তার অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর আরো বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে, এতে বাড়ছে তারল্য ঝুঁকি। 

আবার ব্যাংক খাতে ঋণ সম্পদের উচ্চ ঝুঁকি এবং এ খাতে মূলধন ও তারল্য দুই-ই কম থাকায় সরকারের ওপর এ খাতকে জরুরি অবস্থায় সহায়তা প্রদান বা আকস্মিক দায়বদ্ধতার ঝুঁকিও বাড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থাটি জানায়, দেশে আসা রেমিট্যান্স প্রবাহ ও উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণছাড় সত্ত্বেও গত কয়েক বছরে রিজার্ভের ক্ষয় হওয়ায় বাহ্যিক ঝুঁকিগুলো মোকাবেলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে বাংলাদেশের।
সংস্থাটির মতে, সামাজিক ঝুঁকি বৃদ্ধি, নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিষয়টি আবারও সামনে আসায় রাজনৈতিক ঝুঁকিও অনেকটা বেড়েছে।

মুডিস সতর্ক করে বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আমাদের বর্তমান প্রত্যাশার বাইরে যেসব ঝুঁকি রয়েছে-পূর্বাভাস নেতিবাচক করার মাধ্যমে তা তুলে ধরা হয়েছে, যা বাংলাদেশের এরই মধ্যে চাপের মধ্যে থাকা আর্থিক সক্ষমতাকে আরো দুর্বল করতে পারে এবং বাহ্যিক দুর্বলতাগুলোকে তীব্র করবে। দুর্বল স্থানীয় ভোগচাহিদা ও সরবরাহ চক্র ব্যাহত হওয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে এসব ঝুঁকি বা বাধা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে পোশাকশিল্পে চলমান শ্রম অস্থিরতাও রপ্তানির পূর্বাভাস নিয়ে শঙ্কার জন্ম দিয়েছে।

মুডিস বলছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বৃহত্তর সংস্কারের এজেন্ডার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, তবে এগুলো তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না তা অনিশ্চিত। তা ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও উচ্চ বেকারত্ব দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার মতো দ্রুত ফলাফল যদি জনগণকে না দিতে পারে, তাহলে এসব সংস্কার চালিয়ে নেওয়ার মতো রাজনৈতিক পুঁজিও থাকবে না সরকারের।

আরও খবর

Sponsered content