চট্টগ্রাম

সাতকানিয়ায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

  প্রতিনিধি ৪ মার্চ ২০২৫ , ৫:৩০:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

সাতকানিয়ায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ এলাকাবাসীর পিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় এলাকাবাসীর ধাওয়ায় ডাকাতরা পালানোর সময় এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে চারজন গ্রামবাসী আহত হন।

সোমবার (৩ মার্চ) রাত সোয়া ১১টায় এঁওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দু’জন হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। আহতরা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। নিহত দু’জন জামায়াতের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

নিহতরা জামায়াতের কর্মী। জামায়াতের দাবি তাদেরকে সালিশী বৈঠকের নামে ডেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এলাবাসীর দাবি এরা ডাকাতি করতে এসেছে। পুলিশের দাবি, যেহেতু নিহতদের কাছে অস্ত্র ছিলো তারা সেখানে কেন গিয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত ছাড়া এ হত্যাকান্ডের কারণ বলা মুশকিল বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

জানা গেছে, নিহতদের একটি গ্রুপ এলাকায় রাতের বেলা ঘুরাঘুরি করার সময় জনগণের সন্দেহ হলে তারা এলাকার মাইকে ডাকাত এসেছে বলে ঘোষণা দেন। মাইকে ঘোষণা শুনার পর এলাকাবাসী জড়ো হয়ে তাদের ওপর হামলা চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে গুলাগুলি হয়। এতে প্রায় ১শ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। একপর্যায়ে নিহতদের গ্রুপের গুলি শেষ হয়ে গেলে তারা পালানোর চেষ্টা করেন। অনেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও নিহত নিজাম এবং ছালেক জনগণের হাতে ধরা পড়ে যায়। জনগণের পিটুনিতে তারা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম বলেন, ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দু’জন নিহত হয়েছেন। এর আগে গ্রামবাসীর ধাওয়ায় পালানোর সময় তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। গুলিতে আহত হয়েছেন চার গ্রামবাসী। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিহত একজনের কাছ থেকে একটি পিস্তল এবং ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া একটি সিএনজি অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, এলাকায় একদল ডাকাত এলে গ্রামবাসী টের পেয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেন। ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দুজনকে পিটুনি দেন তারা। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, এলাকায় ডাকাত পড়েছে সন্দেহে গ্রামবাসী তাদের ঘিরে ফেলে। পরে পিটুনিতে দু’জন নিহত হন। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, আহত চার জনকে প্রথমে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছিল। পরে তাদেরকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোছেন বলেন, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। একটি সালিস বৈঠকের কথা বলে তাঁদের এওচিয়া এলাকায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দুজনের মাথায় পর্যায়ক্রমে আঘাত করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content