প্রতিনিধি ৯ মার্চ ২০২৫ , ৪:০৪:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটায় মো. শহিদুল আলম জুয়েল (৩২) নামে এক যুবককে অপহরণের অভিযোগে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১৩-১৪ জনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। শুক্রবার কর্ণফুলী থানায় ভুক্তভোগী জুয়েল নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেন, যার নম্বর-০৮। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি বন্দর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের এম মঈন উদ্দিন (৪৬), মো. শাহেদুর রহমান প্রকাশ শাহেদ (৫০), মির্জা আজাদ (৪০), মো. আব্দুর রাজ্জাক (৪০), জাফর আহমদ (৫৮), মো. ইমরান পাটোয়ারী (২৯), আব্দুর শুকুর (৩৫) ও জহিরুল আলম (৪০)।
ভিকটিম জুয়েলের অভিযোগ অনুযায়ী, ৫ মার্চ রাতে তারাবির নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে চরপাথরঘাটায় ৯-১০জন ব্যক্তি সিএনজিযোগে এসে তাকে জানায়, তার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এরপর তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে শাহ আমানত সেতু হয়ে ফিশারি ঘাটে নিয়ে যায় এবং পরে কালো রঙের একটি প্রাইভেট কারে লালদীঘির মাঠে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে মাস্ক পরিহিত ব্যক্তিরা তাকে সাদা প্রাইভেট কারে তুলে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরায় এবং কাজীর দেউড়ী এলাকায় ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দর-কষাকষির পর ৩ লাখ টাকার শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। এদিকে, কর্ণফুলী থানার পুলিশ তল্লাশি চালালে অপহরণকারীরা তাকে টাকা ছাড়াই ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘অপহরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে, মামলার এজাহার ও ভিকটিমের গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যের মধ্যে অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে।
ভিকটিমের দাবি, তাকে এক ছাত্র সংগঠনের পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়, তবে মামলায় ওই সংগঠনের কাউকে আসামি করা হয়নি। এছাড়া, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দিচ্ছিল বললেও, তিনি আগে কোনো জিডি করেননি।
স্থানীয়দের মতে, ঘটনাটির পেছনে জাহাজে জাটকা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা থাকতে পারে, আবার কেউ এটিকে পরিকল্পিত নাটক বলছেন। অভিযুক্তদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে তাদের ফাঁসানো হয়েছে। মুক্তিপণের টাকার পরিমাণ নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। প্রথমে ১০ লাখ, পরে ৫ লাখ, শেষে ৩ লাখ দাবি করা হয়। তবে মামলায় টাকা আদায়ের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।