রংপুর

বিরামপুরে পুরাতন সুতা থেকে দড়ি তৈরি

  প্রতিনিধি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৭:০৯:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মশিহুর রহমান, বিরামপুর (দিনাজপুর) :

পুরাতন কাপড় থেকে সুতা সংগ্রহ করে সেই সুতা থেকে দড়ি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে বিরামপুর উপজেলার ২০ পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে। পুরাতন সুতা থেকে নতুন স্বপ্ন বুনে চলছে শিশুদের লেখাপড়া, ঘুরছে সংসারের চাকা।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিরামপুর উপজেলার বিজুল নলিয়াপাড়া গ্রামে ১৫/২০টি বাড়িতে ঘরঘর শব্দে চলছে সুতা সংগ্রহ ও দড়ি তৈরির কাজ। গ্রামের মেহেদুল ইসলাম (৩৬) জানান, তিনি ৮/১০ বছর আগে প্রথম এই দড়ি তৈরির প্রযুক্তি বিরামপুরের নলিয়াপাড়া গ্রামে নিয়ে আসেন। তার দেখাদেখি গ্রামের আরো ১৫/২০ পরিবার এই দড়ি তৈরির কাজে নামেন। তারা সকলে বগুড়া থেকে পুরাতন নাইলন, উল ও পশমী কাপড় কিনে আনেন। সেই কাপড় থেকে চরকা ঘুরিয়ে ববিনে সুতা সংগ্রহ করা হয়।

 

আবার ২০/২৫টি ববিন একসাথে বিদ্যুৎ চালিত মেশিনে ঘুরিয়ে সুতা একত্রিত করা হয়। পরবর্তীতে একত্রিত করা সুতা বিদ্যুৎ চালিত মেশিনে ঘুরিয়ে তৈরি করা হয় রঙ বেরঙয়ের দড়ি। পুরাতন কাপড় ২০-৪০ টাকা কেজি দরে কিনে সেই কাপড়ের সুতা থেকে দড়ি তৈরি করে বিক্রি করেন ৬০-১০০ টাকা কেজি দরে। এখানকার দড়ি বিরামপুরের পার্শ্ববর্তী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকাড়রা কিনে নিয়ে যান।

 

ফলে দড়ি বিক্রিতে কোন বেগ পেতে হয়না। এভাবে দড়ি তৈরি করে ঐ গ্রামের প্রতিটি পরিবার ৮-১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসে আয় করে থাকেন। এই আয় দিয়ে দরিদ্র পরিবারগুলো স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। তাদের প্রতিটি সন্তান স্কুল-মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে, স্বচ্ছল ভাবে চলে সংসার।

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, সমবায় কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ২০১৬ সালে এই দড়ি পরিদর্শন করেছেন। সে সময় বিজুল নলিয়াপাড়া কুঠির শিল্প শ্রমজীবি সমবায় সমিতি নিবন্ধনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সমিতির সভাপতি আব্দুল মমিন জানান, তারা ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে বা সরকারি আর্থিক সুবিধা পেলে এই শিল্পকে আরো বড় পরিসরে পরিচালিত করে অধিক লাভবান হতে পারবেন।

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকার জানান, আমি এই উপজেলায় নতুন এসেছি, তাই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা হয়নি। খোঁজ নিয়ে ঐ দড়ি পল্লীর পরিবারদের প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by