প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৪:৫৮:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
আলমগীর হোসেন বিজয়নগর প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের শিশাপুরা জালালপুর পূর্ব পাড়ার আবদুল লতিফ (৫৫) কে, বাড়ীর জায়গা ক্রয়বিক্রয়ের বিরোধের জের ধরে পাকা খুঁটি আর কাটা তারের বেড়া দিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে গোরস্থান ও কৃষি জমি সহ নিজের জায়গায় যেতে বাধা দিলেন তারই প্রতিবেশী। সৃষ্ট সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এস আই মেহেদী এলাকার সর্দারদের নিয়ে সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার ৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টায় স্থানীয় সালিশ কারক দের আহ্বানে উভয়পক্ষকে নিয়ে সালিশে উপস্থিত হয়ে কথাবার্তা শেষে, ভূমির মাপঝোঁক করে সীমানা নির্ধারণ করার সময় তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে মঞ্জুর আলীর নির্দেশে আকাশ মিয়া গং পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রামদা, কিরিচ, শাবল সহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উপস্থিত প্রতিপক্ষের বাড়ীঘরে ও লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে আওয়াল মিয়া, আবদুল কাদির, নোয়াজ আলী ও মো. জীবন রক্তাক্ত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আওয়াল মিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সে এখনও চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সালিশ চলাকালীন সময়ে উপস্থিত লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে আহত করায় এলাকাজুড়ে বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার লোকজন প্রশাসনের কাছে মঞ্জুর আলী ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেছেন। এবিষয়ে কথা বলতে মঞ্জুর আলীর বাড়ীতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এই মারামারির ঘটনায় আবদুল লতিফ বাদী হয়ে ২২ জনকে আসামি করে বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। যা এখন বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। মামলার কয়েকজন আসামি বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ঘুরছে। এলাকার লোকজন মনে করেন, মঞ্জুর আলী গং যে কোন সময় আবার সংঘাতে জড়াতে পারে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মেহেদী বলেন, সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে সালিশ সভা চলাকালীন সময় অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করায় এলাকার সবাই মঞ্জুর আলীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এই মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত থেকে কয়েকজন জামিনে থাকলেও মঞ্জুর আলী কে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আশা করি খুব দ্রুত তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করতে সক্ষম হব।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হরষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সারোয়ার রহমান ভূইয়া বলেন, মারামারি করেছে বলেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি অন্যায়কারীর পক্ষে নয়। যারা অন্যায় করেছে বিজ্ঞ আদালতের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রার্থনা করছি।
এবিষয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাজু আহমেদ বলেন, পরবর্তী সংঘাত এড়াতে দায়ীত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছে। দুষ্কৃতিকারী আসামীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে। নতুন করে আর যেন সংঘাত না হয় এবিষয়ে পুলিশের কঠোর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।