ঢাকা

অনলাইন গ্রুপের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

  প্রতিনিধি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৭:৪০:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন গ্রুপের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

অনলাইন গ্রুপের সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও তাদের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় হয়রানি থেকে পরিত্রান পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, মানিকদী, মাটিকাটা ও ভাষানটেক এলাকার ভূক্তভোগীরা।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনলাইন গ্রুপের মালিক ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ত্র্যাস, তদবিরবাজ, প্রতারক, ভূমিদস্যু, বেসিক ব্যাংকের ১৩৬ কোটি টাকা লোপাটকারী খাঁন মো. আক্তারুজ্জামানের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শতকত উল ইসলাম বলেন, রাতের আধারে একটি শহীদ পরিবারের বসতবাড়ি বুলডুজার দিয়ে ভেঙ্গে জবর দখল করে নেয় অনলাইন গ্রুপ। প্রয়াত স্বরাষ্টমন্ত্রী সাহারা খাতুনের আত্মীয় মো. আইয়ুব আলী গংদের ইসিবি চত্বরে অবস্থিত প্রায় ২একর সম্মত্তি জবরদখলের চেষ্টা কালে খান মো. আক্তারুজ্জামানকে বাধা প্রদান করলে পরবর্তীতে তাকে র‌্যাব দিয়ে গুম করে মেরে মৃত প্রায় অবস্থায় নির্জন জঙ্গলে ফেলে দেয়।

পরবর্তীতে উক্ত আউয়ুব আলী গংদের সম্পত্তি জবরদখল করে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করেন এবং আইয়ুব আলী সেখান থেকে জানে ফিরলেও বর্তমানে তিনি পঙ্গুত্ব অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। এ ছাড়া স্বপ্না আক্তার নামে এক অসহায় মহিলার সম্পত্তি জবরদখল করার জন্য প্রথমে র‌্যাব দিয়ে তার জম্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফিল্মি স্টাইলে ঢাকায় তুলে নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন মাদক ও জাল টাকা দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে জেলে প্রেরণ করে। দীর্ঘ কারা ভোগের পরে জামিনে মুক্ত হন এবং আদালত থেকে ওই মামলায় খালাস প্রাপ্ত হন। এয়ারফোর্স থেকে অবসর প্রাপ্ত মো. শহীদুর রহমান রাসেল গংদের ৮ কাঠা জমিতে বৈধভাবে রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন করে সেখানে পাইলিং করেন।

পরবর্তীতে উক্ত জমি আক্তারুজ্জামানের বাহিনী অবৈধভাবে জবরদখল করে নেয়। মো. কালাম গং (১৩০) জনের একটি সম্পত্তি আক্তারুজ্জামান অবৈধভাবে জবরদখল করে নেন। নাজিম উদ্দিন ভূইয়ার ১ বিঘা সম্মত্তি জবরদখল বার বার চেষ্টায় ব্যর্থ হলে উক্ত নাজিম উদ্দিন ভূইয়াকে ২৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ডিবি দিয়ে বনানী থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং ডিবি অফিসে নাজিম উদ্দিন ভূইয়াকে তার সম্পত্তি ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি দেয়। নাজিম উদ্দিন ভূইয়া তাতে রাজি না হলে জামাতের ৬ টি পুরাতন মামলা দিয়ে অজ্ঞাত আসামী হিসেবে জেলে পাঠায়। তাকে জেলে রেখে গত ১১ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখে প্রকাশ্য দিবালোকে তার সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশ্যে তার ভাই, কর্মচারী এবং প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারকে গুলি করে এবং এলোপাতাড়ি কোপাইয়া মারত্মক জখম এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। নাজিম উদ্দিন ভূইয়ার সম্পত্ত্বি জবরদখল ব্যাপক চাঞ্চল্যের জম্ম দেয়। যা নিয়ে ডিএমপি হেড কোয়ার্টারের গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করছেন।

রানা নামের একজনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তার পরিচালিত স্কুলটিকে জবরদখল করে নেয় অনলাইন গ্রুপ। সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীর ভোগ দখলীয় সম্পত্তি জবরদখল করে নেয়। ক্যান্টনমেন্ট মানিকদী, মাটিকাটা এলাকায় অনেক স্থাপনা রাজউক থেকে রেসিডেন্সিয়াল অনুমোদন নিয়ে নকশা বহির্ভূতভাবে ৩ তলা পর্যন্ত কমার্শিয়াল স্থাপনা তৈরী করে বহু মানুষের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

সংবাদ সম্মেলন শেষে মুঠোফোনে ভোরের দর্পণের সাথে আলাপকালে অনলাইন গ্রুপের হয়রানির শিকার শতকত উল ইসলাম বলেন, মাটিকাটা এলাকায় গত দেড় যুগ আগে ৮ কাঠা জমি কিনেন তিনি। দীর্ঘদিন যাবৎ জমির খাজনা খারিজ পরিশোধ করে ভোগ দখল করে আসছেন ভূক্তভোগী শওকত উল ইসলাম। গত ২৮ জুলাই ২০২৪ অনলাইন গ্রুপ আমার জমি দখল করার চেষ্টা করলে আমি তা প্রতিহত করি এবং ক্যান্টনমেন্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। কিন্তু চলতি মাসের ১৬ তারিখে আবারো অনলাইন গ্রুপআমার জমি দখলের চেষ্টা করে। এতে আমি বাধা দেইএবং আবারো থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আমার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করতে অনলাইন গ্রুপ থানায় গেলে থানা ওই গ্রুপের মিথ্যা মামলা নেয়নি।

পরবর্তীতে অনলাইন গ্রুপ আমার বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেন। মামলা তদন্তের জন্য থানাকে নির্দেশ দিলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, মানিকদী, মাটিকাটা ও ভাষানটেক এলাকার বহু মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অনলাইন গ্রুপ হয়রানি করে আসছে। অনলাইন গ্রুপের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসি ইতিপূর্বে বহুবার থানায় অভিযোগ করছে এবং সাংবাদিক সম্মেলন করছে। এতকিছুর পরও কিছুতেই থামছেনা অনলাইন গ্রুপ। প্রশাসনের তৎপরতা দেখলে গা ঢাকা দিয়ে আবার ও সোচ্চার হয় এ গ্রুপ।

সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনরা করতে এলাকায় গড়ে তুলেছে একাধিক কিশোর গাং। এ বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এদের দিয়েই দখল বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে অনলাইন গ্রুপের স্বত্ত্বাধিকারি খাঁন মো. আক্তারুজ্জামান।

আরও খবর

Sponsered content