প্রতিনিধি ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৭:২২:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করছে তা কিছুটা উদ্বেগের আবার কিছুটা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
বিকালে আশুলিয়ার গণবিদ্যাপীঠ স্কুল মাঠে পাথালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সাধারণ জনগণ, সাধারণ ছাত্র সমাজ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু এ নির্দলীয় সরকারের যারা দায়িত্বে রয়েছে তাদের প্রথম দায়িত্ব ছিল ফ্যাসিস্টদের বিচার করা। আমাদের যত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রয়েছে, সবার প্রধান দায়িত্ব ছিল ছাত্রলীগ যারা বিগত সময়ে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা।
তিনি আরও বলেন, আপনারা লক্ষ্য করে দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বাংলাদেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপাচার্য মহোদয়রা এই ছাত্রলীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারেনি। এবং তারা সে ধরনের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এবং তাদের তদন্ত প্রতিবেদন এগুলোও তারা প্রকাশ করছে না। এই ফ্যাসিবাদের দোসর যারা ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করছে না, এ কারণে এ ধরণের দু:সাহস দেখায় ছাত্রলীগ। এখন পর্যন্ত সারাদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারপরেও তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে অবস্থান করে এই ফ্যাসিস্টরা কর্মসূচি দেওয়ার দুঃসাহস দেখায়। আমি আহবান জানাচ্ছি নির্দলীয় সরকার সহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যেন তারা দৃশ্যমানগতভাবে বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বলেন, এদেশের জনগণের প্রত্যাশা এবং সাধারণ ছাত্রসমাজ এই প্রত্যাশা রাখে।এই নির্দলীয় সরকারের যে প্রশাসনিক কাঠামো সেগুলো সত্যিকার অর্থে অনেক আগেই ভেঙ্গে পড়েছে। এখন পর্যন্ত মেরামত হয়নি। সে কারণে তাদেরও দায় নিতে হবে। আমরা এখনও যদি কোন অভিযোগ পাই, প্রথমে কিন্তু পুলিশকে কল দেই। আমরা বলি ভাই এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে। আপনারা কি অবগত রয়েছেন! তখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় তাদের কাজ করতে অনীহা। এখনো অনেক থানার ওসি রয়েছে, এখনো সাধারণ জনগণের পক্ষে কাজ করতে তাদের অনীহা রয়েছে। তারা এটিকে পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে পালন করছেনা। তাদেরকেও আরো সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এই প্রশাসনিক কাঠামোকে আরো সচল রাখতে হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করব।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদল ও আগের ফ্যাসিবাদীদের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। তারা সরাসরি সন্ত্রাসকে উৎসাহিত করত। তাদের সরাসরি নির্দেশ দেয়া হত যে যারা সন্ত্রাসে এক্সপার্ট তাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হবে এবং সেধরণের পেশী শক্তি তাদের প্রদর্শন করতে হবে। আর আমাদের ক্ষেত্রে আমরা নম্র, ভদ্র, বিনয়ীদের সামনে নিয়ে আসছি। আপনারা দেখবেন অত্র এলাকার সবচেয়ে ভালো ফ্যামিলির যারা সন্তান, তারাই ছাত্রদল করে। সামান্যতম কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের যদি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাদের আমরা ছাত্রদলের সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো। তাদের অব্যাহতি দেয়া হবে।
আওয়ামী-ছাত্রলীগের কর্মসুচি প্রতিহত করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যেমন গত ১৫ বছরে নির্যাতিত হয়েছি তেমনি পরিক্ষিত ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে। পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার অত্যাচার নির্যাতন সহ আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে যারা গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের লড়াই-সংগ্রাম করেছে তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা এদেশের শ্রেষ্ঠ নেতৃত্ব। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশে আর কোন ফ্যাসিস্ট মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবেনা।
ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ তমিজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবাল এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন সুমন, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ রাকিব খন্দকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুজন শিকদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল হক সুমন।
এছাড়া আশুলিয়া থানা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ইসমাইল হাবিব ও পাথালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম শাওন সহ ৫টি ইউনিয়ন ছাত্রদলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।