প্রতিনিধি ১১ জুলাই ২০২৪ , ৫:৪৮:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বাণিজ্যিক ভাবে লটকনের চাষ করেছেন মাঈদুল ইসলাম যুবরাজ। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ টসটসে সুস্বাদু লটকনে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন এ লটকন চাষি। ঘন সবুজ পাতার ভেতরে ডালপালা ফেটে বের হওয়া বোঁটায় ঝুলছে অসংখ্য রসালো লটকন। কোনো গাছে সবুজ আবার কোনো গাছে কিছুটা হলুদ বর্ণের পাকা লটকন ঝুলতে দেখে মন ভরে যায়। লটকনের বাজারদর ভালো থাকায় খুশি লটকন চাষি।
উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রাজারাম এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আঁকা-বাঁকা গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে লটকন। হলুদ ও সবুজ রঙের পাকা লটকন উঁকি দিচ্ছে গাছের পাতা ও ডালপালা ভেদ করে। টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে হলুদ রঙে পরিপক্ব হয়েছে সুস্বাদু এ ফল। ভিটামিন-সি, প্রোটিন ও ক্যালরি যুক্ত মুখরোচক এ ফল মনোমুগ্ধকর করে রেখেছে বাগান।
লটকন বাজারজাত করণের আগ মুহূর্তে নানা পদ্ধতিতে পোকামাকড় দূর করছেন তিনি। গাছের গোড়া থেকে উপরের ডালপালা পর্যন্ত ভরে গেছে লটকনে। এখন পুরোদমে বাজারজাত শুরু হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকায় খুশি লটকন চাষি। প্রতিদিন এলাকার মানুষ দেখার জন্য আসেন বাগানে। কম খরচে ভালো ফলন ও অধিক লাভ হওয়ায় প্রতি বছর এ এলাকায় বাড়ছে লটকন চাষির সংখ্যা।
বাগান দেখতে আসা এলাকাবাসী লেয়াকত আলী (৫২), রুবেল মিয়া (৩৫), মহাশিন মিয়া (২৬), দেলোয়ার (৪৮) ও মকবুল মিয়া (৬০) সহ আরও অনেকে বলেন, যুবরাজ ফল চাষি। তার বাগানে লটকন সহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ আছে। যা বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রি করে অনেক আয় করছেন। যুবরাজের প্রতিভা দেখে আমরাও ফল চাষের প্রতি আগ্রহী হই। তার কাছে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ নিয়ে আমরাও বিভিন্ন জাতের ফল গাছের চারা রোপণ করেছি।
লটকন চাষি মাঈদুল ইসলাম যুবরাজ বলেন, আমি বিভিন্ন ধরনের উন্নত জাতের শতাধিক ফলের চারা দিয়ে বাগান সাজিয়েছি। তার মধ্যে লটকন গাছ রয়েছে ৩৮ টি। সেগুলোর ২৮ টি গাছেই ব্যাপক ফলন এসেছে। উন্নত জাতের ফলের চারা হওয়ায় ব্যাপক ফল ধরেছে। বাজারদর ও চাহিদা ভালো থাকায় বেশি দামে লটকন বিক্রি করেছেন। তিনি আরও বলেন, এ বছর লটকনের বাগান পাইকারিতে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। আগামী বছর দ্বিগুণ আয়ের আশা করছেন এ ফল চাষি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, ফলফলাদির মধ্যে লটকন চাষ একটি লাভজনক ফলের চাষ। লটকন চাষে রোগবালাইয়ের তেমন একটা ঝামেলা নেই খরচও কম।
ভালো জাতের লটকনের গাছ থেকে কলম করা চারা রোপণের ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যেই ফলন আসে। ফল দেয় টানা ২০ থেকে ৩০ বছর। তাছাড়া লটকন বিক্রি নিয়েও কোনো চিন্তা থাকেনা। লটকন চাষে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান তিনি।