প্রতিনিধি ১১ মার্চ ২০২১ , ৭:১৭:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
করতোয়া নদী থেকে লুটেরাদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও লুটপাট বন্ধ হয়নি দীর্ঘ দিনেও। করতোয়া নদীর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের ল্যাংড়ার ঘাট নামক স্থানে ওই কারবার চলছে বেশ জোরেসোরে।
করতোয়া নদীপাড়ের ৩ গ্রামের বালু লুটেরারা সমিতি করে মাসের পর মাস দোর্দন্ড প্রতাপে বালু তুলে বিক্রি করে আঙ্গুল ফুলে কালাগাছ বনে যাচ্ছে।
অধৈভাবে যত্রতত্র বালু তোলার কারণে শত-শত কৃষক পরিবার তাদের আবাদি জমি, ঘর-বাড়ি ভাঙনের ফলে করতোয়া গর্ভে বিলীন হবার আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পীরগঞ্জে উপজেলা প্রশাসন ক’মাস আগে বালু উত্তোলন বন্ধে মাইকিং করার পর বালু লুটেরারা তাদের কারবার আরও দ্বিগুন করেছেন। ওই সময় বালু তুলতো ১৬ জন। এখন সমিতি করে বালু তুলছে ৩৩ জন।
করতোয়া নদীটি রংপুর ও দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী পীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট উপজেলার ধার ঘেষে প্রবাহমান। নদীর ঘাটে ৩৩ জন বালু লুটকারী যুবক সমিতি গঠন করে উঠানো বালু শত শত মাহেন্দ্র ট্রলিতে বিক্রি করছে প্রতিদিন। কেউ এতে বাধা দিলে সমিতির সদস্যরা হুমকি প্রদান করেন।
যেকারণে এলাকার কেউ মুখ খোলার সাহস করে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগি এলাকাবাসী এমন অভিযোগ করেছেন। গত কয়েক দিন আগে ল্যাংড়ারঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অবৈধভাবে বালু তোলা ও ট্রলিযোগে বিক্রির মহোৎসব চলছে।
করতোয়া নদীর উক্ত ঘাটে দেড়শ ফিটের মধ্যে ৮টি বোমা মেশিন লাগিয়ে দিবারাত্রী বালু লুটের কারবার চালাচ্ছে তারা। প্রতিদিন শত-শত ট্রলি বালু পরিবহন করায় গ্রামের রাস্তা ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে। রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল হাটবাজারে বিক্রি করতে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপশি ধুলোবালির কারণে এলাকার পরিবেশ দুষিত হওয়ায় বাড়িতে থাকা দুরহ হয়ে পড়ছে শিশুসহ গৃহবধূদের।
অবৈধ বালুর কারবার বন্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে এলাকাবাসী। চতরা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি ইতিপূর্বে উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে উত্থাপন করেছিলাম। তার পরেও বন্ধ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীবের সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক ও পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায় জানান- এ সব বালু উত্তোলন বন্ধে শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
একই রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন- আমরা ইতিপূর্বে করতোয়া নদীর বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি এবং তা অব্যহত আছে।