আবুল কালাম আজাদ ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ৬:৪৪:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে এক প্রধান শিক্ষকের বদলি বাতিলের অভিযোগ উঠেছে। অনলাইনে বদলি নীতিমালা অনুসারে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় বদলির জন্য নির্বাচিত ঘোষণার একদিন পরে অজ্ঞাত কারণে তা বাতিল করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রাথমিক অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আন্তঃ উপজেলা-থানা বদলি কার্যক্রম শুরু হলে উপজেলার কাশিয়াগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজা বেগম সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী যাদুপোদ্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে বদলির জন্য ১ এপ্রিল আবেদন করেন।
তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৫ এপ্রিল অনলাইনে বদলির আবেদনের ফলাফলে ওই বিদ্যালয়ের শূন্য পদের জন্য তিনি নির্বাচিত হন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ১৬ এপ্রিল ওই বদলি আবেদন বাতিল করা হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কোন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে বদলির জন্য আবেদন করা হলে বিদ্যালয়ের ওই পদে মামলা চলমান থাকলে সেখানে বদলির আবেদন নিয়ম অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য হবে না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস যাদুপোদ্দার স. প্রা. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটিতে মামলা দেখানোয় ওই প্রধান শিক্ষকের বদলি আদেশ বাতিল হয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাদুপোদ্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা থাকাকালীন অবস্থায় প্রায় দেড় বছর পূর্বে তিনি অবসর গ্রহন করেন। এরপর থেকেই ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি শূন্য রয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে যাদুপোদ্দার স. প্রা. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য দেখিয়ে ও বিদ্যালয়ে মামলা নেই উল্লেখ করে উশিঅ/উলি/কুড়ি/১৩২/১ নং স্মারকে গত ২৯ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। এ কারণে ওই প্রধান শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী তাকে যাদুপোদ্দার স. প্রা. বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু একদিন না পার হতেই অজ্ঞাত কারণে মামলার অজুহাত দেখিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওই বদলি আদেশ বাতিলের জন্য প্রতিবেদন দেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান, ওই প্রধান শিক্ষকের বদলির আবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রায়ন করা হয়েছে। ওই স্কুলে পূর্বের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। তিনি মামলা চলমান থাকা অবস্থায় অবসরে গেছেন। এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। এ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ভুল তথ্য পাঠানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়টি নিয়ে এখন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই অধিদপ্তরে জানানো হবে এবং করণীয় বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ওই বিদ্যালয়ের মামলা সংক্রান্ত কোন প্রতিবেদন দেয়া হয়নি।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।