প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২৪ , ৪:১০:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
‘‘ এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার রুখে দিন’’ এই স্লোগানকে ধারন করে কুড়িগ্রামের উলিপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকাদান প্রদান করা হয়।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা পৌরসভাধীন হযরত ফাতিমা (রাঃ) পৌর বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে ৫ম শ্রেনী থেকে ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের মাঝে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা দেয়া হয়। এছাড়া উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টিকা প্রদান কার্যক্রম ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৪ শত ৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮ হাজার ৫শত ৮০ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্যান্সার প্রতিরোধ টিকা প্রদান করা হবে।
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ৯ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত নয় এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সের কিশোরীদেরকে কমিউনিটি ক্লিনিকে টিকা দেয়া হবে। এছাড়া ২৯ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮ কর্মদিবসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থায়ী ক্যাম্পে টিকাদান কার্যক্রম চলবে।
জানা যায়, নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। বাংলাদেশে প্রতি লাখ নারীর মধ্যে ১১ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং দেশে প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার ৯ শত ৭১ জন নারী এরোগে মৃত্যুবরণ করেন। এইচপিভি টিকা গ্রহণের মাধ্যমে এরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। নির্দিষ্ট বয়সী ও নির্ধারিত শ্রেণিতে অধ্যয়নরত কিশোরীরা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করে টিকা কার্ড দেখিয়ে টিকা গ্রহণ করেন।
বিদ্যালয়ে টিকা নেয়া শিক্ষার্থী আন্নাফি রাইয়া তাসনিম অর্থি (৫ম শ্রেনী), কাইফা জান্নাত (৬ষ্ঠ শ্রেনী), মানছুরা জাহান হিমু (৭ম শ্রেনী), হেপি আক্তার (৮ম শ্রেনী) ও মারজিয়া আক্তার (৯ম শ্রেনী) সহ আরও অনেক শিক্ষার্থী জানান, ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা গ্রহণ করে আমাদের কোন প্রকার সমস্যা দেখা দেয়নি। আমরা এ টিকার গুরুত্ব বুঝে টিকা গ্রহণ করেছি। তারা আরও বলেন মরণ ব্যাধি ক্যান্সার প্রতিরোধ টিকা সকল শিক্ষার্থীদের নেয়া উচিত বলে মনে করেন।
টিকা প্রদান কার্যক্রম সময়ে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমটি ইপি আই মুরাদ হোসেন, স্বাস্থ্য সহকারী বেবি বেগম, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক রানু মিয়া, স্বেচ্ছাসেবি সিরাজুল ইসলাম, নুরে জান্নাত চশমে জাহান ও অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সহ সকল শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ। এছাড়া টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. সজিব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ক্যান্সার নামের রোগটি অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একডোজ এইচপিভি টিকা নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে পারে। রোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়াই উত্তম। তাই সুনির্দিষ্ট শ্রেণিতে পড়ুয়া ও নির্দিষ্ট বয়সী কিশোরীদের এই টিকা প্রদান কার্যক্রম চলছে।