প্রতিনিধি ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৭:৪১:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উপজেলা প্রশাসনের মার্কেট নির্মাণ কাজ নোটিশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট। নক্সা অনুমোদন না থাকায় কাজটি বন্ধ করা হয়। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পৌর শহরের পীর ফয়েজউল্লাহ সড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে। সরকারি জমিতে সেখানে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মিনি সুপার মার্কেট করা হচ্ছিল। এ মার্কেটের আয় দিয়ে চালানো হবে উপজেলা প্রশাসন পাবলিক লাইব্রেরী।
অপরদিকে সকাল ১১টার দিকে ওই জমি নিজেদের সমিতির নামে জেলা পরিষদ থেকে লীজকৃত দাবি করে রিকশাজীবি সমিতির ৬০-৭০ জন সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানববন্ধন করেছেন। ৩০-৩২ বছরের অধিক সময় ধরে সেখানে তাদের সমিতির অফিস ছিল। প্রায় ৪ বছর আগে তারা স্থায়ী নির্মাণ কাজ করতে গেলে প্রশাসন সেগুলো গুড়িয়ে দিয়ে জায়গাটি নিজেদের দখলে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে ঘটনাস্থলে মানববন্ধন চলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল। তিনি সমিতির উপস্থিত সদস্যদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে চলে যান। এরপর নির্মাণ কাজ শুরু হলে পৌরসভার কর্মচারীরা এসে কাজটি বন্ধ করে দেয়। ওই সময় তারা কাজের ঠিকাদার জাকির হোসেন দেওয়ান ও শাহ আলমকে কাজ বন্ধে মেয়রের সাক্ষরিত নোটিশটি পৌঁছে দেয়। একই সময় তারা নির্মাণ শ্রমিকদের কাজের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করে নিয়ে যায়। মার্কেট নির্মাণে পৌরসভা থেকে নক্সা অনুমোদন না নেওয়ার অভিযোগে এ নোটিশটি দেওয়া হয়।
রিকশাজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে আমাদের অফিস ও রিকসা স্ট্যান্ড করে দিতে পৌরসভার মেয়রের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি নির্মাণ কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন।’
ঠিকাদার জাকির হোসেন দেওয়ান বলেন, ‘নির্মাণ কাজটি করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয় আমাকে নিয়োজিত করেছেন। ওনাদের দেওয়া মালামাল দিয়ে আমি কাজটি করাচ্ছি। এটি করতে গিয়ে পৌরসভার কর্মচারীরা আমার শ্রমিকদের যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ায় ও নোটিশ দেওয়ায় কাজটি করতে পারছি না।’
রায়পুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রাসেল ইকবাল বলেন, ‘ওই স্থানে সরকারি প্রায় আড়াই শতাংশ জমি রয়েছে। এটি জেলা পরিষদের জমি নয়। ওই জমিতে কারো লীজ নেই। আমাদের জমিতে আমরা উপজেলা প্রশাসন পাবলিক লাইব্রেরীর ব্যয় নির্বাহের জন্য ৪টি দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।’
রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, ‘যেকেউ পৌর এলাকায় ইমারত বা স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে পৌরসভায় নক্সা অনুমোদন করতে হয়। সরকারি জমিতে কাজটি করার জন্য কোনো নক্সা অনুমোদন করা হয়নি। এজন্য নির্মাণ কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নক্সা অনুমোদন হলেই কেবল কাজটি করা যাবে। ওই দুই ব্যক্তি নির্মাণ কাজ পরিচালনা করায় প্রাথমিকভাবে তাঁদেরকেই নোটিশটি করা হয়।’
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অন্জন দাশ বলেন, ‘নোটিশের বিষয়টি আমরা অবগত। বিষয়টি নিয়ে কথা হচ্ছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পাবলিক লাইব্রেরীর ব্যয় নির্বাহের জন্যই সেখানে মার্কেটটি করা হচ্ছে।’