প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২৪ , ৪:১৭:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুই ওজনদার(হেভিওয়েট) প্রার্থী নিয়ে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে পটিয়া আওয়ামী লীগ। নির্দলীয় নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার বাধা না থাকায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দুই প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে স্পষ্টত বিভক্তিতে জড়িয়ে পড়েছেন।
নির্বাচনে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ (আনারস) ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার দোয়াত কলম) প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে ভোট যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে দুই প্রার্থী বিরামহীন প্রচারণায় চষে বেড়াচ্ছেন পটিয়ার আনাচে কানাচে। নির্ঘুম এ প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে সমর্থকদের নানা গুজব তথা অপপ্রচার। দিন দিন যেন উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ (আনারস) প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম শামসুজ্জামান চৌধুরী।
অপরদিকে পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর আলম দোয়াত –কলম প্রতীকের প্রার্থী দিদারুল আলমের পক্ষে মাঠে থাকলেও সাধারণ সম্পাদক কাজ করছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী হারুণের পক্ষে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদির অনুসারীরাও আনারস প্রতীকের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের এ বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে।
বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় বিভক্তির রেশ কাটতে না কাটতেই উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নতুন করে বিভক্তি দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগে।এদিকে এ নির্বাচনকে ঘিরে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও সাবেক সংসদ সদস্য হুইপ শামসুল হক চৌধুরী। বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে এ দুই নেতার অবস্থানের কথা। তারা নিজেরা স্পষ্ট কিছু না বললেও ভোটের মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী দোয়াত–কলম প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।
অন্যদিকে সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী সমর্থন দিচ্ছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থীকে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে পটিয়ায় দ্বিধা বিভক্ত আওয়ামী লীগের দুই বলয় এবার মুখোমুখি হচ্ছে উপজেলা নির্বাচনেও। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে প্রার্থী ও দলীয় প্রতীক না দেওয়ায় দলের পাঁচ নেতা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। তবে এরমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার শেষে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও নগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন।
দুই প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন। সভা সমাবেশে উত্তপ্ত বক্তব্যে গরম করছেন নির্বাচনী মাঠ। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম শামসুজ্জামান চৌধুরী জানান, পটিয়ায় আওয়ামী লীগে কোনো বিভক্তি নেই। দলের উপজেলার সাধারণ সম্পাদক যেখানে উপজেলায় প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন সেখানে আমি তার পক্ষে কাজ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়ার সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, স্থানীয় কোনো নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের পক্ষাবলম্বনের সুযোগ নেই। আমি চাইবো শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী জয়ী হয়ে আসুক। জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরী বলেন, যোগ্য, পরিচ্ছন্ন ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে আমি সমর্থন করছি। তিনি নির্বাচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমকে বেগবান করতে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৯ মে) পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এবারের নির্বাচনে ১২৮টি কেন্দ্রে পটিয়ার ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩৮ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৬ জন।