চট্টগ্রাম

কক্সবাজারের বিভিন্ন গ্রামে বাংলা মদে সয়লাব, যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও

  প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২১ , ৬:২১:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রতীকী ছবি

বি এম হাবিব উল্লাহ, কক্সবাজার:

কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাং রাখাইন পাড়া ও উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা গ্রামের কতিপয় মাদককারবারীদের উৎপাদিত দেশীয় চোলাই মদে সয়লাব এখন পুরো হারবাং ও পালংখালী ইউনিয়ন।

মাদক সেবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে ইউনিয়নের বিশাল অংশের একটি যুবসমাজ। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই পাল্টে যায় হারবাং রাখাইনপাড়া ও থাইংখালী-তেলখোলার রাস্তার চিত্র। তরুণ থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও মদ পান করে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। বর্তমানে দেশীয় তৈরীকৃত এসব চোলাই মদ পালংখালীর পার্শ্ববর্তী রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও পাচার হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তেলখোলা গ্রামের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ মদে আসক্ত বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। হারবাংয়ের বাংলা এসব মদ চকরিয়া পৌর শহর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নেও পাচার হচ্ছে। সুত্রে জানা গেছে, তেলখোলা গ্রামের ফাইঞেমং চাকমা, মানিক মেম্বার, উলাসিং চাকমা, মনথাইসা চাকমা, ওথিমং চাকমা, পদ্মরানী চাকমা, মিলন চাকমা, মংথাং চাকমা, ওঠাইং চাকমা, ওখ্যথাইং চাকমা, কান্ধোসিং চাকমা, পুঠাইং চাকমা, ছেমং চাকমা সহ অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে ঘরে মদ তৈরি করে বিক্রয় করে যাচ্ছে।

 

তবে হারবাংয়ের রাখাইনপাড়ায় এমন কোন ঘর নেই যে ঘরে বাংলা মদ তৈরী হয়না। গুটিকয়েক মাদক কারবারীরা যুগের পর যুগ ধরে মাদক তৈরি ও সেবনের এই ধারা অব্যাহত রাখলেও যুবসমাজকে রক্ষায় মাদক উৎপাদন বন্ধ করতে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি মনে করছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পাওয়া অনেক কষ্টকর কিন্তু মদ পেতে হলে কোনো কষ্ট করতে হয় না এসব এলাকায়। রাত অবধি মদ পান করে জেগে থাকেন যুবসমাজ। বিয়ে-শাদি থেকে পূজা উৎসবের প্রতিটি পর্বে মদকে প্রধান উপকরণ হিসেবে বেছে নিয়েছেন মাদকাসক্তরা।

 

কয়েকজন চাকমা ও মুসলিম বিবাহিত নারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের স্বামীরা সন্ধ্যার পর মদের পাট্টায় গিয়ে মদ পান করে মাতাল হয়ে যান। ‘মাল’ খাইয়া সন্ধ্যার পর চিৎকার করে। আবার পরিবারের লোকজনকে মারধরও করে। কেউ কেউ রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। রাখাইন ও চাকমা সম্প্রদায়ের শাসনকার্য পরিচালনায় নিয়োজিত দু’একজন প্রতিনিধি জানান, উৎপাদিত মদের পাট্টায় এখন ভিন্ন এলাকার যুবকদেরও দেখা যায়।

 

এতে করে পুরো উপজেলার লোকজনও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এসব মদ পান করে যুবসমাজ ধ্বংস হচ্ছে, মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তাদের মদের পাট্টাসমূহ বন্ধ করা উচিত। তা নাহলে মদ পান করে দৈনিক যা রুজি করে, সব টাকা শেষ করে দেবে।

কক্সবাজার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হলে মাদক নির্মূল সম্ভব হবে। আমরা সে আলোকে চেষ্টাও করে যাচ্ছি। বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তেলখোলা এলাকার মাদক উৎপাদন ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, উখিয়া থানা পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে চোলাই মদ জব্দ করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের আটক করে মামলা করেছে। চকরিয়াতেও একই অবস্থা। অসংখ্য বার অভিযানে অনেক মাদক কারবারীকে আইনের আওতায় আনা হলেও সম্প্রতি সময়ে পুলিশী অভিযান থমকে গেছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by