প্রতিনিধি ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৫:১২:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুরে বিভিন্ন এলাকা দেড়শে বনভূমি দখল করা হচ্ছে। নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়ি ও দোকানপাট মার্কেট। গাছ কেটে পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সৃষ্ট অস্তিত্বশীল পরিস্থিতির সুযোগে এ দখল যজ্ঞ শুর হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা বন বিভাগের চারটি এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের দুটি রেঞ্জের সব কটিতে দখলকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ফ্যানগুলোর অধিকাংশ বিটে ইতিমধ্যে বিগার বিঘা বনভূমি দখল করে শতশত পাকা বিল্ডিং, আধাপাকা টিন সেট ও বড়সড়ো করে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। ঝরে জমিনে জানাজায় অভ্যুত্থানের দিন সুবিধাবাদী দূর্বৃত্তরা কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর চড়া হয়। তারা কালিয়াকুর রেঞ্জ অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক বাংচুর গুরুত্বপূর্ণ নথি ও রেকর্ডপত্র তছনছ, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর, এতে মোটরসাইকেল আগুন এবং ১২টি রাইফেল লুট করে নিয়ে যায়।
এতে অন্যান্য অফিসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি অফিসে কর্মকর্তারা কুসলে আমরা থেকে রক্ষা পান। এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বন কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে টহল এবং বনাঞ্চল রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজে যেতে পারছেন না। কোথাও কোথাও দখলে বাধা দিতে গিয়ে আক্রমত্বক অবস্থার মুখে পড়তে হয়েছে। পুলিশ নিজেরা অক্লান্ত হওয়ায় বন বিভাগকে সহযোগিতা করতে পারছে না। কালিয়াকুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম ঘটনার আরালে কে বলেন লুট হওয়া অগ্নাশয় গুলোর মধ্যে থানা পুলিশ তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। আমলা পরিকল্পিত ছিল যে অবস্থা হয়েছিল অফিসে থাকলে তাদের মেরে ফেলা হতো। তিনি বলেন বিভিন্ন জায়গায় বাগানের গাছ কেটে বড় বড় বিল্ডিং বাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে গেলে নারী-পুরুষ জড়ু হয়ে আমলা চালায়। সীমিত স্টাফ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। কাচিঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, তার অফিসে হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল। তিনি বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে বুঝিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিটের কাফিলাতলী এলাকা দখল প্রবণ। শেকার ইজ্জতপুর বাজারে থাকা বনভূমি দখল করে দশটি নতুন দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারের আশেপাশে বনভূমিতে করা হয়েছে# প্রায় ৪০ টি ঘর। এছাড়া কাপিলে তুলিতে বেশ কয়েকটি আকাশমনি বাগানের অন্তত সাত হাজার চারা তুলে বনভূমি দখলে নেওয়া হয়েছে।
বন কর্মকর্তারা অসহায়, উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি সুফল প্রকল্পের প্রায় তিন হাজার চারা তুলে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বসতবাড়ি। খবর পেয়ে বিটু অফিসের লোকজন ঘটনাস্থল দুজনকে মারদোর করা হয়। এরপর থেকে তারা প্রাণভয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। দিন-রাত নতুন নতুন স্থাপনার কাজ। একই রেঞ্জের মনিপুর বিটের নয়াপাড়া, কাপ্তামারা ও রাজশাহী মার্কেট এলাকায় বনভূমি দখল করে শতাধিক বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। চলছে নতুন নতুন স্থাপনার কাজ। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মধ্যে বেশি দখল হচ্ছে ভাওয়াল রেঞ্জের ভবানীপুর বিটে সেখানে বনভূমি দখল করে দিনরাত নির্মাণ কাজ চলছে। শরীর জমি নিয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে বনভূমিতে ফাউন্ডেশন আজ দিয়ে বাড়ি করেছেন। মন্ডল গার্মেন্টসের পূর্ব পাশে, বাঘের বাজার পশ্চিমে চায়না টিন ফ্যাক্টরি- আশে পাশে বনভূমিতে পাকা বাড়ি ও পর মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। মেম্বার বাড়ি ও নলযানী সজনী পিকনিক স্পটের আশেপাশে অবাদে চলছে বাড়িঘর তৈরির কাজ। এছাড়া ভবানীপুরে বাজারের পশ্চিম পাশ থেকে মাইজপাড়া পর্যন্ত ১৪২২ দাগের বনভূমি দখল করে গড়ে উঠেছে মার্কেট ও বাড়ি ঘরের বড় বড় স্থাপনা। ভবানীপুর আকন পাড়া প্রায় ৩০ টি গোরের কাজ চলমান।
হোম এক্সপেক্টরের সামনে ১২৬৯ দাগে সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে প্রায় ৩০টি বাড়ি ও কয়েকটি দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। মোহাম্মদিয়া গার্মেন্টসের সামনে ৯৭৭ দাগের গেজেট ভুক্ত বনভূমি দখল করে ফাউন্ডেশন বাড়ি ইউনিট দিয়ে ১৫ ২০টি করে বিল্ডিং বাড়ির কাজ চলমান। ফরিদ মার্কেটের দক্ষিণ পাশে ৩০ টি শেষ পর্যায় এখন বিট পাকা করার কাজ চলমান। কাজী শহিদুল ইসলামের বাড়ির পশ্চিম পাশে বাড়ির কাজ শেষ পর্যায়। ভবানীপুর চৌরাস্তার মোড় থেকে পশ্চিম সাফারি পার্ক সড়কের দুপাশে ১০৬৫ দাগে গাছপালা কেটে রাতে-দিনে চলছে বাড়িঘর ও মার্কেট তৈরির হিড়িক। বিট কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গত ২৫শে আগস্ট জয়দেবপুর থানা পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেছে। কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছেনা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ই আগস্ট এর পর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থা কোন প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বনভূমিতে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর দোকানপাট করা হয়েছে। এর মধ্যে হয়েছে ৪০০ স্থাপনা।
দখল ও বোনদের আহ্বান জানিয়ে বারবার মাইকিং হল কাজ হচ্ছে। গত ২৭শে আগস্ট সেনাবাহিনী নিয়ে টহল দিয়েও দখলদারীদের ঠেকানো যায়নি। কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকার পতনের পর প্রথম ১০-১৫ দিন যে পরিমাণ বনভূমি দখল ও বনের অতি সাধন হয়েছে, বনসম্পদ রক্ষা করতে হলে উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন যৌথ বাহিনী সহযোগিতা নিয়ে সর্বত্র উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তবে হেও অভিযোগ উঠেছে বনভূমি দখলের এই প্রেক্ষাপট কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরবে বাণিজ্য করছেন। দখলদারীদের মামলার হুমকি দিয়ে দালালদের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছেন।
দ্বিতীয়তঃ তাদের যুগটা দেশে পৃথিবীতে জায়গা দখল হচ্ছে বেশি। উদাহরণ-শ্রীপুর রেঞ্জের সিংরাতলি বিট অফিসের পাশে মাদকলা এলাকায় বনভূমিতে পাকা ও টিনশেড বাড়ি ঘর গড়ে উঠেছে। বিট অফিস লোকজন সেখানে গেলেও আমলা বা আক্রমত্বক অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। বিটে অফিসের লেনদেন করে কাজ হওয়ার কথা সবার জানা।