বাংলাদেশ

কোনও অজুহাত নয়, স্কুল খোলা রাখুন : ইউনিসেফ

  প্রতিনিধি ২৯ জানুয়ারি ২০২২ , ৬:৩৪:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিপর্যয় এড়াতে কোনও অজুহাত ছাড়াই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা নিয়ে স্কুল খোলা রাখার জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ।

গতকাল শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এক বিবৃতিতে শিশুদের ‘শেখার পথে’ ফিরিয়ে আনতে এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, কোনও অজুহাত নয়। স্কুল খোলা রাখুন। শিশুরা অপেক্ষা করতে পারছে না।

স্কুল খোলা রাখতে ইউনিসেফ নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো করেছে:

 

করোনাভাইরাস মহামারির জন্য বিশ্বের স্কুলগুলো পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওমিক্রন ধরনটি যখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে, এটি যাতে শিশুদের পড়াশোনাকে ব্যাহত করতে না পারে, সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।

আমরা জানি যে, কোভিড-১৯ ঝুঁকি প্রশমনের ব্যবস্থাগুলোই স্কুলগুলোকে খোলা রাখতে সাহায্য করে। আমরা আরও জানি যে, ডিজিটাল সংযুক্তির পেছনে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলেই কোনও শিশু পেছনে পড়ে থাকবে না। প্রতিটি শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনতে আমাদের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি কমিউনিটির প্রান্তিক শিশুদের ওপর বিশেষ লক্ষ্য রেখে কিছু বিষয়ে বিস্তৃত সহায়তা প্রদান করা। যেমন শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, মানসিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তা, সুরক্ষা ও অন্যান্য পরিষেবা প্রদান।

শিক্ষক ও স্কুল কর্মীদের অবিলম্বে টিকা দিন

প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মী ও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯ এর টিকাদানের পরপরই এই টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও স্কুল কর্মীদের সম্পূর্ণরূপে সমর্থন ও অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

ইউনিসেফ শিশুদের টিকাদানকে সমর্থন করে

অগ্রাধিকার প্রাপ্য জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি সুরক্ষিত করার পর এবং টিকার যথেষ্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে ইউনিসেফ শিশুদের টিকাদানকে সমর্থন করে। সশরীরে স্কুলে যাওয়ার জন্য টিকাদানকে পূর্বশর্ত করবেন না। কোভিড-১৯ টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে সশরীরে স্কুলে যাওয়ার শর্ত আরোপ করলে তা শিশুদের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ না পাওয়া ও ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইউনিসেফ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের টিকাদান ছাড়াই স্কুলগুলো খোলা রাখার এবং কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কৌশল যাতে পড়াশোনা ও সামাজিক জীবনের অন্যান্য দিকগুলোতে শিশুদের অংশগ্রহণকে সহজতর করে তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করে।

সংকটময় পরিস্থিতিতে সব সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়

কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বজুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে তা আমরা স্বীকার করি। তবে এক্ষেত্রে ঝুঁকি খুবই বেশি। শিশুদের স্কুলে রাখার জন্য সম্মিলিতভাবে আমাদের পক্ষে সম্ভব সবকিছু করতে হবে।

মহামারির কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দেওয়া হলেও সরকার নতুন করে ২৩ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলার ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ করতে হলে তা অবশ্যই শেষ অবলম্বন হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে করতে হবে। সংক্রমণের ঢেউ সামাল দিতে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি তার মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষেত্রে সবার শেষে ও খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে স্কুল থাকা উচিত।

আরও খবর

Sponsered content