চট্টগ্রাম

খাগড়াছড়িতে স্ট্রবেরি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা

  প্রতিনিধি ২ মার্চ ২০২১ , ৮:৫৫:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. ইব্রাহিম শেখ, পার্বত্য চট্টগ্রাম :

খাগড়াছড়িতে স্ট্রবেরি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও বাজারজাতের সমস্যার কারণে চাষে প্রসার পাচ্ছে ধীরগতিতে। ফলটির মূল্যহার উচ্চ এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষের অপরিচিত হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা খুবই কম। বাজার ব্যবস্থার সমস্যার কারণে চাষে তেমন আগ্রহও নেই অনেকের। সরকারিভাবে বাজারজাতের ব্যবস্থা করা হলে স্ট্রবেরি চাষে স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপক উৎসাহ পাবে এবং খাগড়াছড়ি জেলাও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে মনে করেন খাগড়াছড়ির প্রথম স্ট্রবেরি চাষী পরেশ চাকমা।

এ ব্যাপারে, খাগড়াছড়ি পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ সেলিম জানান, গত তিন বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছেন জেলার মহালছড়ি উপজেলার করইল্যাছড়ি গ্রামের পরেশ চাকমা। অনেকটা সখের বশেই স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছিলেন তিনি।

সখের বশে করতে করতে এ চাষে নেশাগ্রস্ত হয়ে এখন শিক্ষকতার পাশাপাশি স্ট্রবেরি চাষকে পেশা হিসেবেই গ্রহণ করেছেন বলে জানালেন লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের এ সহকারী প্রধান শিক্ষক। তিন বছর আগের অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে বর্তমানের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক উন্নত বলেও জানান তিনি। স্ট্রবেরি চাষ থেকে বাড়তি আয় হওয়ায় নিজের দুই ছেলে ছাড়াও আত্মীয় স্বজনের ছেলেমেয়েদেরও পড়ালেখায় আর্থিক সহযোগিতা করছেন পরেশ চাকমা। গত বছর পঁচাত্তর শতক জমি থেকে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার কেজি উৎপান করেছিলেন।

প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হতো। ক্রেতা হিসেবে শুধু সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা ও শিক্ষিত লোকজন ছিল। তবে বর্তমানে সাধারণ ক্রেতারাও স্ট্রবেরি কিনতে খামারে যাচ্ছে বলে জানান, পরেশ চাকমা স্ত্রী মুনমুন খীসা। পঁচাত্তর শতক জমিতে চাষ করতে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয় আর আয় হয়েছিল প্রায় পনের লাখ টাকার মতো। চলতি মৌসুমে বিমলের জমিতে দুই জাতের স্ট্রবেরি অ্যামেরিকান ফ্যাস্টিবল ও জাপানি রাবি-থ্রি পাওয়া যায়। ব্র্যাকের আয়োজনে ২০১৬ সালে কুমিল্লায় শিক্ষকতা পেশার বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে স্ট্রবেরি চাষের উপর একটি লিফলেট বিলি করা হয় তাদের। লিফলেটটি রেখে দেন।

পরে ২০১৭ সালে কক্সবাজারের চকোরিয়া থেকে চারা সংগ্রহ করে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। এবার চতুর্থবারের মতো স্ট্রবেরি চাষ করছেন তিনি। বর্তমানে তিনি নিজেই চারা সরবরাহ করছে। তার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে বিভিন্ন উপজেলার কয়েকজন কৃষকসহ অনেকেই দুই বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছেন বলে জানান বিমল ব্রত চাকমা।

পাশের গ্রামের থৈলাচাই মারমা, তার এক চাচাতো ভাই ছোটন চাকমা, পানছড়ি উপজেলার জ্যোতিপাল চাকমা, দীঘিনালা বাবুছড়ার এক কৃষকসহ এক ইউএনডিপি’র কর্মকর্তা, মহালছড়ি জোন, মাটিরাঙা জোনের লোকজন চারা সংগ্রহ করে চাষ করছে বলে জানান তিনি।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by